চাকরিচ্যুত এসরোটেক্স গ্রুপের শ্রমিকদের ডিসি অফিসের সামনে অবস্থান

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা ধর্মগঞ্জে অবস্থিত এসরোটেক্স গ্রুপের চাকরিচ্যুত ২২০ শ্রমিক বকেয়া সার্ভিস চার্জ পরিশোধ ও ৩০ শ্রমিকের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে জেলা প্রশাসকের গেটের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।

রোববার (১২ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন তারা। টানা দুই ঘণ্টা অবস্থান শেষে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে বসেন শ্রমিকরা।

অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া সুইং অপারেটর রুবিনা ইসলাম বলেন, “বাবা-মা, ভাই-বোনদের থেকে ৫০০ থেকে হাজার টাকা ধার নিয়ে চলতে হচ্ছে। কিন্তু ঘর ভাড়া ও দোকান ভাড়া তো আর মানে না। কোনো রকম ডাল-ভাত খেয়ে চলতাছি। আজকে যখন চালের ডিব্বা খুলে চাল দেখি নাই, তখন আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি।”

অন্য শ্রমিক মো. নাঈম বলেন, “দুই মাস ধরে দপ্তরে দপ্তরে ঘুরছি। জেলা প্রশাসক প্রথমে বলেছিলেন, সাত দিনের মধ্যে তদন্ত হবে। আমরা স্মারকলিপিও দিয়েছি, কিন্তু কোনো জবাব পাইনি। ডিসি স্যার আমাদের বিষয়ে কোনো গুরুত্ব দেননি। তাই আজ রাস্তায় নামতে হয়েছে।”

অবস্থান কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন শ্রমিক প্রতিনিধি মো. রাকিব। তিনি বলেন, “আগস্টের ২ তারিখ থেকে কাজের সময়, বিরতি, নাস্তা—সব বন্ধ করে দেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ। পরে বিষয়টি নিয়ে ফ্লোর ইনচার্জ ও জিএমের সঙ্গে কথা বললে বহিরাগতদের এনে আমাদের ওপর হামলা করে। এরপর অনেক শ্রমিককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এখন সম্পূর্ণ চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “চাকরি ফেরত না দিলে ২৬ ধারায় আমাদের সার্ভিস চার্জ পরিশোধ করতে হবে—এই দাবি জানালে মালিকপক্ষ অস্বীকার করে।”

অবস্থান শেষে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আখতার বৈঠক করেন। তিনি বলেন, “বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিলুফা ইয়াসমিন এর সঙ্গে বৈঠকে শ্রমিকদের দাবি-অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে। তদন্ত করে আগামী ২১ অক্টোবরের মধ্যে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। বৈঠকে মালিকপক্ষের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।”