সোনারগাঁয়ে ব্যাগের ভেতর তরুণীর মরদেহ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় ব্যাগবন্দি অবস্থায় এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের কাইকারটেক সেতুর ঢালে মরদেহটি উদ্ধার করা হয় বলে জানান সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল হাসান খান।
নিহতের আনুমানিক বয়স অনুর্ধ্ব ২০ বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে, মরদেহটি গত শুক্রবার থেকে নিখোঁজ সায়মা আক্তার মিম নামে ১৮ বছর বয়সী এক তরুণীর বলে দাবি করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
মিম পাবনার সুজানগরের দয়ালনগর গ্রামের সাইফুল ইসলামের কন্যা। স্বামী মো. রায়হানের সঙ্গে মোগারাপাড়া ইউনিয়নের আমতলা এলাকার একটি ভাড়াবাসায় থাকতেন তিনি।
তবে, পুলিশ বলছে, পরিবারের সদস্যরাও শতভাগ নিশ্চিত নন। নিহতের পরিচয় নিশ্চিতের চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি রাশেদুল হাসান।
তিনি বলেন, সন্ধ্যায় কাইকারটেক সেতুর নিচে মেনিখালী নদীর ঢালুতে একটি ব্যাগ থেকে উৎকট গন্ধ পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে থানা পুলিশ গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে।
“মরদেহের কন্ডিশন অনুযায়ী অন্তত তিনদিন আগে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে বলে ধারণা করছি। মরদেহটি গুমের উদ্দেশ্যে হাত পা বেঁধে পলিথিনে ভরে স্কচটেপ পেঁচিয়ে ট্রাভেল ব্যাগে ভরে নদীতে ফেলার চেষ্টা করা হয়। তবে, ব্যাগটি পানিতে না পড়ে ঢালুতে আটকে থাকে”, প্রাথমিক তদন্তের বরাতে জানান রাশেদুল হাসান।
মরদেহটি কলাগাছিয়া নৌ ফাঁড়ির পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরবর্তী তদন্তকাজ নৌ পুলিশ করবে বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
এদিকে, মিমের মামা খোকন শেখ সাগর জানান, দুই বছর আগে পরিবারের অমতে রায়হানকে বিয়ে করে মিম। রায়হানের বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। এ দম্পতি ভাড়া থাকতেন মোগরাপাড়া ইউনিয়নের একটি ভাড়া বাসায়। মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকার একটি ফাস্টফুডের দোকানে চাকরি করতো মিম। ওই বাসা থেকে কয়েক মিনিটের হাটা পথের দূরত্বে থাকেন সাগর। গত শুক্রবার সকাল দশটার দিকে মিমের বাসায় যান সাগর। ওই সময় মিম তার মামাকে তাদের দাম্পত্য কলহের কথা জানায়।
“মিমের স্বামী আরেকটা বিয়ে করছে। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে মনমালিন্য চলছিল। শুক্রবার আমি ভাগ্নিরে বুঝিয়ে-শুনিয়ে চলে আসছি। এরপর থেকে তার সঙ্গে আর কথা হয়নি। শনিবার গিয়েও বাসায় পাইনি। রায়হানকে জিজ্ঞেস করলেও সে উল্টা-পাল্টা জবাব দেয়। সোমবারও গিয়ে আমি ভাগ্নির কোনো খোঁজ পাইনি।”
চারদিন ধরে সন্ধান না পেয়ে মঙ্গলবার সকালে সাগর তার ভাগ্নির নিখোঁজের বিষয়ে সোনারগাঁ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এই অভিযোগ দাখিলের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ব্যাগের ভেতর মরদেহটি উদ্ধারের খবর পাওয়া যায়।
“আমি লাশ উদ্ধারের খবর পাইয়াই আমার স্ত্রীকে বলি সেখানে যেতে। পরে আমি ও আমার স্ত্রী ৮০ ভাগ নিশ্চিত হয়েছি এটা আমার ভাগ্নির মরদেহ। তার স্বামীই তাকে খুন করে লাশ নদীতে ফেলেছে বলে আমাদের সন্দেহ”, অভিযোগ করেন মিমের মামা সাগর।
তবে, কলাগাছিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক সালেহ আহমেদ পাঠান বলেন, মরদেহটি মিমের কিনা সে বিষয়ে পুলিশ শতভাগ নিশ্চিত নয়। নিহতের পরিচয় শনাক্তে এখনও কাজ করছে পুলিশ। তবে, মিমের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার স্বামী মো. রায়হানকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।





































