সোনারগাঁয়ে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে এক নারীর ওপর দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, কোটি টাকার প্রতারণা এবং হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনার বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী মিনা বেগম নামের এক নারী।
বুধবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে সোনারগাঁয়ের একটি স্থানীয় রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মিনা বেগম।
তিনি অভিযোগ করেন, গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সোলেমান মিয়া রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রায় দেড় বছর আগে তাকে জোরপূর্বক বিয়ে করেন। বিয়ের আগে থেকেই তিনি সাবেক আওয়ামী লীগ মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর একান্ত সহচর হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
বিয়ের পর থেকেই মাদক ও জুয়ার টাকার জন্য নানা অজুহাতে চাপ দিতে থাকেন সোলেমান।
মিনা বেগম বলেন, “আমি সংসার টিকিয়ে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। কিন্তু প্রতিনিয়ত গালিগালাজ, মারধর, ভয়ভীতি ও হুমকি ছিল তার নিত্যদিনের আচরণ। বিভিন্ন সময় নির্যাতন করে আমার কাছ থেকে প্রায় ৭০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় সে।”
তিনি আরও বলেন, “আরও টাকা ও সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিলে আমি অস্বীকৃতি জানাই। পরে বাবার বাড়িতে চলে আসি এবং আদালতে নারী নির্যাতন ও যৌতুক মামলা দায়ের করি। আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে সোলেমান ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং তিন-চারজন সহযোগী নিয়ে রাতে আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। জানালার কাঁচ ভেঙে ঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রতিবেশীরা দ্রুত আগুন নেভাতে না পারলে আজ হয়তো আমি জীবিত থাকতাম না।”
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মিনা বেগম আরও বলেন, “আমার কলেজপড়ুয়া ছেলেকে মিথ্যা হত্যা মামলায় আসামি করে হয়রানি করছে এই সন্ত্রাসী সোলেমান। আমি একজন মা হিসেবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমার পরিবারের প্রাণনাশের আশঙ্কা রয়েছে। আমি সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচার ও নিরাপত্তা চাই।”
সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী, এলাকাবাসী ও মানবাধিকার কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও অভিযুক্ত সোলেমান মিয়ার দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।
মানবাধিকার কর্মীরা বলেন, “একজন নারীর এমন নির্যাতনের শিকার হওয়া অত্যন্ত লজ্জাজনক। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কেউ যেন আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি না দেখাতে পারে, সে বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর অবস্থান প্রয়োজন।”