সমিতি অফিসে তালা, গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে উধাও কর্মকর্তারা

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নীলাচল শ্রমজীবী সমবায় সমিতি শতাধিক গ্রাহকের প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করে অফিসে তালা ঝুলিয়ে উধাও হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতারণার শিকার গ্রাহকরা বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, ২০২০ সালে কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া পূর্ণবাসন কেন্দ্র এলাকায় সমিতিটি কার্যক্রম শুরু করে। প্রথমে ঋণ দিয়ে গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করে তারা। পরে এফডিআর, সঞ্চয় ও অন্যান্য বিনিয়োগের নামে টাকা গ্রহণ করতে থাকে। সমিতির ম্যানেজার মাইনুদ্দিন খান জয়, সাধারণ সম্পাদক মো. সবুজ ও কোষাধ্যক্ষ মো. জিকু দীর্ঘদিন গ্রাহকের অর্থ গ্রহণের পর সম্প্রতি অফিসে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যান।
সমিতির অফিস তালা বন্ধ দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও পালিয়ে যাওয়া প্রতারকদের সন্ধান পাননি।
অভিযোগ অনুযায়ী, শুধু মো. শাহিন নামে এক গ্রাহকের কাছ থেকে বিভিন্ন হিসাবে ৭ লাখ ৪৯ হাজার টাকা, প্রবাসী তাসলিমা বেগমের কাছ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, চৈতি আহম্মেদ মুন্নির কাছ থেকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা, তাছলিমা আক্তারের কাছ থেকে আড়াই লাখ টাকা, পিঠা বিক্রেতা কদ বানুর কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা, গার্মেন্টস কর্মী জায়েদা খাতুনের কাছ থেকে ২ লাখ ১৭ হাজার টাকা, প্রবাসী ময়না আক্তারের কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা এবং আরও অনেক গ্রাহকের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে ভুক্তভোগীরা বলেন, “খেয়ে না খেয়ে কষ্ট করে জমানো টাকা সমিতিতে রেখেছিলাম। আজ সব শেষ। আমরা এর বিচার চাই।”
এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
উপজেলা সমবায় বিষয়ক কর্মকর্তা আলমগীর আজাদ ভূঁইয়া জানান, প্রায় ৭০ জন গ্রাহকের পৌনে এক কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পেয়েছেন, সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রূপগঞ্জ ইউএনও সাইফুল ইসলাম বলেন, “নীলাচল শ্রমজীবী সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পেয়েছি। সমবায় কর্মকর্তাকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”