শোষণ-বৈষম্যমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম জোরদার করতে হবে: সিপিবি

প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা ও কমিউনিস্ট বিপ্লবী সুনীল রায়ের ২৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ শহরের মাসদাইর শ্মশানে তাঁর স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন বামপন্থী, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. মন্টু ঘোষ, হাফিজুল ইসলাম, খেলা ঘর কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য রথীন চক্রবর্তী, সিপিবি নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এম এ শাহীন, বাসদ জেলা কমিটির সদস্য সচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, জেলা সিপিবি সদস্য দুলাল সাহা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ মালেক প্রমুখ। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা সিপিবির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শিবনাথ চক্রবর্তী।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সুনীল রায় ছিলেন শ্রমিক শ্রেণির অধিকার প্রতিষ্ঠায় আপসহীন এক সংগ্রামী নেতা। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত তাঁর ভূমিকা ছিল সাহসিকতায় ভরা। পাকিস্তানি দুঃশাসনের সময় শ্রমিক আন্দোলনে অংশ নিয়ে বহুবার জেল-জুলুমের শিকার হন তিনি। সিদ্ধিরগঞ্জের চিত্তরঞ্জন কটন মিলে তাঁত শ্রমিক হিসেবে কাজ করার সুবাদে শ্রমজীবী মানুষের দুঃখ-কষ্টকে নিজের জীবনের অংশ করে নিয়েছিলেন তিনি।
নেতারা বলেন, আজকের এই শোষণ-বৈষম্যময় সমাজ ব্যবস্থায় শ্রমিক শ্রেণির মুক্তির জন্য সুনীল রায়ের আদর্শ ও সংগ্রামী চেতনা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও দেশের ধনীক শ্রেণিভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো পালাবদল ঘটালেও সাধারণ মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। সিপিবি নেতৃবৃন্দ মনে করেন, রাষ্ট্রের গঠনমূলক পরিবর্তন ছাড়া প্রকৃত মুক্তি সম্ভব নয়।
তাঁরা আরও বলেন, আজকের দুঃসময়ে লুটপাট, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই একটি শোষণমুক্ত, গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে বামপন্থীদের রাষ্ট্রক্ষমতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে জনগণের সক্রিয় সমর্থন জরুরি বলেও তারা মত প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, প্রগতি লেখক সংঘসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সুনীল রায় ১৯২১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরের শ্যামগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০০১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জে মৃত্যুবরণ করেন।