গুলিস্তানের মিছিলে গ্রেপ্তার নারায়ণগঞ্জের সেই সাইদ শেখের জামিন

গুলিস্তানের গোলাপশাহ মাজারের পাশে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলে ‘স্লোগান দেওয়ার’ অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া নারায়ণগঞ্জের বাকপ্রতিবন্ধী সাইদ শেখ (২২) জামিন পেয়েছেন। মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জাকির হোসাইন জামিনের আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সাইদের আইনজীবী মোহাম্মদ লিটন মিয়া জানিয়েছেন, বুধবার তার মুক্তি প্রত্যাশা করছেন তারা।
গত ২৪ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া নারায়ণগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের অনুসারীরা গোলাপশাহ মাজারের পাশে মিছিল করে। মিছিল থেকে সাইদসহ নারায়ণগঞ্জের তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অপর দুই আসামি হলেন বন্দরের কথিত যুবলীগ নেতা রাজু আহমেদ ওরুফে স্ট্যান্ড রাজু ও শহরের নিতাইগঞ্জের শেখ মো. শাকিল। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দিয়ে পরদিন তাদের আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানো হয়।
পল্টন মডেল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আবু ইউসুফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ২৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। উল্লেখিত ১২ জনের মধ্যে ১০ জনই নারায়ণগঞ্জের।
আসামিরা হলেন, বন্দরের নুরুল ইসলামের ছেলে মো. রাজু আহমেদ (৩৫), নিতাইগঞ্জের শেখ মো. আব্দুল রশিদের ছেলে শেখ শাকিল (৩৯), কুতুবপুরের তোফাজ্জল শেখের ছেলে মো. সাঈদ শেখ (২১), বন্দরের সায়মন খাঁন (৩৫), বাবু (৩০), রবিন (৩০), পলাশ (৪২), মহানগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিশুক (৩৩), ফতুল্লার কুতুবপুরের নাঈম শেখ (২৯) এবং একই এলাকার ইভান (২৬)।
মামলায় বলা হয়, আসামিরা রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দিয়েছেন এবং সমাবেশ আয়োজনের চেষ্টা করেছেন। তবে সাইদের পক্ষে আইনজীবীরা যুক্তি দেন, তিনি বাকপ্রতিবন্ধী, এমনকি নিজ হাতে ভাত খেতেও পারেন না—তাহলে স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ অযৌক্তিক।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ দাবি করে, সাইদ প্রকৃতপক্ষে বাকপ্রতিবন্ধী নন, বরং অস্পষ্টভাষী। তবে আদালত মানবিক দিক বিবেচনায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল না হওয়া পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
সাইদের পরিবারের দাবি, নারায়ণগঞ্জের পাগলায় নানি ও মামার কাছে থাকেন তিনি। পরিবার বলছে, জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী সাইদ রাজনীতি বোঝেন না, নিজ কাজও করতে পারেন না। হঠাৎ কীভাবে গুলিস্তানে গিয়েছিলেন, তা তারা জানেন না।
সাইদের মা সুমি বলেন, “ও হাত দিয়ে নিজে ভাত খেতে পারে না। কোনো কাজ করতে পারে না। দৌড়াতে গেলে পড়ে যায়। আমার প্রতিবন্ধী ছেলেটার মুক্তি চাই।”