জুলাই আন্দোলন কারো একার নয়: মামুন মাহমুদ

জুলাই আন্দোলন জাতীয় নাগরিক পার্টি বা কারও একার নয় বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘জুলাই কারও একার না। জুলাই এনসিপি বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নয় কিংবা শুধু বিএনপির নয়। কিন্তু এতে বিএনপির যথেষ্ট ত্যাগ রয়েছে জুলাইয়ে। গত ১৫ বছর তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি।’
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত রক্তদান কার্যক্রমে তিনি এসব কথা বলেন। খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘গত ২০২৩ সালের অক্টোবরের পর থেকে আমরা একদফা আন্দোলনে ছিলাম। কিন্তু এ–মধ্যে ছাত্ররা কোটা আন্দোলন শুরু করে, তাদের ওপর পুলিশ হামলা করে। সেই হামলাকে কেন্দ্র করে তারা আমাদের সঙ্গে একদফায় যুক্ত হয়েছে। আমাদের সরকার পতনের আন্দোলন চলমান ছিল। সেই একদফার সঙ্গে ছাত্ররা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে দাঁড়িয়ে তখন ফ্যাসিবাদের দোসর পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। সুতরাং আন্দোলনে যারা নিহত, আহত, এমনকি যে এক গ্লাস পানি নিয়ে রাজপথে এসেছে তাকেও শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করে নিতে হবে।’
মামুন মাহমুদ বলেন, ‘এই আন্দোলন কোনো একক ব্যক্তি, দল বা সংগঠনের নয়। নতুন নতুন অনেক দল সৃষ্টি হচ্ছে, আমরা স্বাগত জানাই। নতুন দল আসবে, কিন্তু কেউ যদি এই আন্দোলনকে কুক্ষিগত করতে চায়, আন্দোলনের সফলতা তারা এনেছে এটা প্রতিষ্ঠিত করতে চায়—তাহলে সেটা জনগণ মেনে নেবে না। কারণ এই আন্দোলনে আমাদের ৪২২ জন নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। হাজার হাজার নেতাকর্মী এখনো পঙ্গু হয়ে জীবনযাপন করছেন। আন্দোলনকে স্মরণীয় করে রাখতে হলে শহীদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করতে হবে, আহতদের পাশে থাকতে হবে। তারেক রহমান সাহেব বলেছেন, শহীদদের পাশে থাকব—দল থাকলে। আমরা যদি ক্ষমতায় যেতে পারি, শহীদদের স্মরণে এমন কিছু করব যাতে ফ্যাসিবাদের দোসররা সারাজীবন ভীত থাকবে।’
জুলাই আন্দোলন স্মরণীয় রাখার আশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘জুলাইকে আমরা যদি স্মরণীয় করে রাখতে পারি, তাহলে সর্বক্ষেত্রে যে দুর্নীতি, অন্যায়, অব্যবস্থাপনা, অবিচারের রাজত্ব কায়েম হয়েছিল বাংলাদেশে—সেগুলো আমরা রোধ করতে পারব। জুলাই যোদ্ধারা যারা নিহত, আহত হয়েছেন—সবার প্রতি আমরা শ্রদ্ধা জানাতে চাই। যার যার প্রাপ্য আমরা বুঝিয়ে দিতে চাই। জুলাই আন্দোলনে আহতদের যারা চিকিৎসা দিয়েছেন—সেই ডাক্তার, নার্সদের শ্রদ্ধা করতে চাই। জুলাই বিপ্লবের সুফল, ভাগ, অহংকার, গর্ব—তার সমভাগে আমরা তাদেরকেও রাখতে চাই।’
ড্যাবের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছরে চিকিৎসাক্ষেত্রে যে বিশৃঙ্খলা হয়েছে, সেগুলো যদি শৃঙ্খলায় ফেরাতে হয় এবং চিকিৎসাসেবার মান উন্নয়ন ও এ পেশার ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে হয়—তাহলে ড্যাবকে শক্তিশালী করতে হবে। ড্যাবের মাধ্যমে সেবার মান উন্নয়ন, আধুনিকায়ন করে মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। তাহলে বাংলাদেশে চিকিৎসাক্ষেত্রে যে নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা—তা দূর হবে। বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে সক্রিয় হোন। আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন থাকবেন না। আপনারা আমাদের অঙ্গসংগঠন না হলেও আপনারা আমাদের সহযোগী। সহযোগী হিসেবে আমরা আপনাদের পাশে থাকতে চাই।’
ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) নারায়ণগঞ্জ শাখার কমিটির আহ্বায়ক ডা. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ও সদস্য ডা. জহিরুল ইসলামের সঞ্চালনায়, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব এড. আব্দুস সালাম আজাদ, বিশেষ অতিথি অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীব, মহানগর বিএনপির সদস্য ডা. মজিবুর রহমান প্রমুখ।