১১ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ২১:০০, ৬ নভেম্বর ২০২৪

আপডেট: ২১:০৫, ৬ নভেম্বর ২০২৪

নারায়ণগঞ্জের ২২ ইউপি চেয়ারম্যান ‘পলাতক’, একজন কারাগারে

নারায়ণগঞ্জের ২২ ইউপি চেয়ারম্যান ‘পলাতক’, একজন কারাগারে

গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নারায়ণগঞ্জের এমপি উপজেলা চেয়ারম্যানদের পাশাপাশি আত্মগোপনে রয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যানরাও। নারায়ণগঞ্জ জেলার ৩৯ ইউনিয়ন পরিষদের ২২ জন ইউপি চেয়ারম্যান নিজ কার্যালয়ে যাচ্ছেন না। তারা পলাতক বলে জানা গেছে। নাগরিক সেবা অব্যাহত রাখতে তাদের অনুপস্থিতিতে প্রশাসক ও ইউপি সদস্যদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জনরোষ এড়াতে এসব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা আত্মগোপনে রয়েছেন। তারা সকলেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলোতে আসামি হয়েছেন। এর মধ্যে একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান জাহেদ আলী। তিনি বর্তমানে কারাগারে।

সদর উপজেলায় সাত ইউনিয়নের চারজন চেয়ারম্যানই আত্মগোপনে রয়েছেন। তারা হলেন- ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফাইজুল ইসলাম, কাশীপুর ইউনিয়ন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এম সাইফউল্লাহ বাদল, গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফজর আলী, বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত আলী।

অন্যদিকে এলাকায় থেকে দায়িত্ব পালন করছেন আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাকির হোসেন, কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু ও এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান।

বন্দর উপজেলার ৫ ইউনিয়নের মধ্যে শুধু মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম আত্মগোপনে আছেন। তার অনুপস্থিতিতে ইউনিয়নের দায়িত্ব ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে এলাকায় থেকে দায়িত্ব পালন করছেন ৩ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। তারা হলেন, বন্দর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এহসান আহম্মেদ, ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদ কামাল হোসেন ও কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান।

অন্যদিকে মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন পদত্যাগ করে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ ইউপিতে আর উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।

আত্মগোপনে থাকা চেয়ারম্যানদের তালিকায় এগিয়ে আছে সোনারগাঁ উপজেলা। এই উপজেলার ১০ ইউনিয়নের একজনও চেয়ারম্যানেরও কোনো খোঁজ নেই। তাদের অবর্তমানে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সরকারি কর্মকর্তা ও ইউপি সদস্যরা।

এ উপজেলায় আত্মগোপনে থাকা চেয়ারম্যানরা হলেন- পিরোজপুর ইউপির মাসুদুর রহমান মাসুম, শম্ভুপুরার আব্দুর রউফ, মোগরাপাড়ার আরিফ মাসুদ বাবু, বৈদ্যেরবাজারের আল আমিন সরকার, বারদীর মাহবুবুর রহমান বাবুল, নোয়াগাঁওয়ের সামসুল আলম, জামপুরের হুমায়ূন কবির, সাদিপুরের আব্দুর রশিদ মোল্লা, সনমান্দির জাহিদ হাসান জিন্নাহ এবং কাঁচপুরের মোশারফ ওমর।

চেয়ারম্যানরা আত্মোগোপনে থাকায় এ উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নে একজন সরকারি কর্মকর্তাকে প্রশাসক এবং বাকি ইউনিয়নে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ইউপি সদস্যদের।

রূপগঞ্জ উপজেলায় সাতটি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। যার মধ্যে পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানই আত্মগোপনে আছেন। তারা হলেন- মুড়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ আলমাছ, গোলাকান্দাইল ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসান ভূঞা, দাউদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. নূরুল ইসলাম, রূপগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান ছালাউদ্দিন ভূঞা। এছাড়া কায়েতপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাহেদ আলী গ্রেপ্তার রয়েছেন।

এ উপজেলার রূপগঞ্জ ইউনিয়নে প্রশাসক এবং বাকিগুলোতে ইউপি সদস্যরা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছেন।

এলাকায় আছেন ভুলতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল হক ভূঁইয়া ও ভোলাব ইউনিয়ন আলমগীর হোসেন। তারা এখন পর্যন্ত নিজ দায়িত্বে রয়েছেন।

আড়াইহাজার উপজেলায় দশ ইউপির মধ্যে তিন চেয়ারম্যান আত্মগোপনে আছেন। তারা হলেন- ফাতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবু তালেব, দুপ্তারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলামের ভাই মো. নাজমুল হক ও সাতগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অদুদ মাহমুদ। তাদের অনুপস্থিতিতে ইউনিয়নগুলোর দায়িত্ব প্রশাসকদের দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে এলাকায় থেকে নিজ দায়িত্ব পালন করছেন ব্রাহ্মণদী ইউপি চেয়ারম্যান মো. লাক মিয়া, বিশনন্দী ইউপি চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, মাহমুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আমান উল্ল্যাহ, হাইজাদী ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন, খাগকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম, উচিৎপুরা ইউপি চেয়ারম্যান ইসমাঈল হোসেন এবং কালাপাহাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান ফাইজুল হক ডালিম।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাকিব আল রাব্বি বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতে নাগরিক সেবা চালিয়ে নেয়ার জন্য তাদের পরিবর্তে প্রশাসক ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। অনুপস্থিত চেয়ারম্যানদের অপসারণ বা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সর্বশেষ

জনপ্রিয়