ডেঙ্গু পরিস্থিতি ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে পাঁচ সংগঠনের যৌথ উদ্যোগ

নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন সংকট ও নাগরিক সমস্যা সমাধানে যৌথভাবে কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলার পাঁচটি সামাজিক সংগঠন। সংগঠনগুলো হলো— নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটি, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক আন্দোলন, নগর ভাবনা এবং ওয়ার্কিং ফর বেটার নারায়ণগঞ্জ।
সংগঠনের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, নিজেদের স্বকীয়তা ও স্বাধীনতা বজায় রেখে তারা নগরের জরুরি সামাজিক ও নাগরিক ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করবেন।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে এই পাঁচ সংগঠনের প্রতিনিধি দল নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আ.ফ.ম মশিউর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন এবং ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা নিরসনে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়ে পাঁচ দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি পেশ করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন— নারায়ণগঞ্জ নাগরিক আন্দোলনের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এড. এবি সিদ্দিক, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর সভাপতি মোহাম্মদ নুরুদ্দিন আহমেদ, নগর ভাবনার আহ্বায়ক অসিত বরণ বিশ্বাস, ওয়ার্কিং ফর বেটার নারায়ণগঞ্জের আহ্বায়ক মাকসুদুল আলম খন্দকার, জাহিদুল হক দীপু, নাসির উদ্দিন মন্টু ও ধীমান সাহা জুয়েল প্রমুখ।
পাঁচ দফা দাবিগুলো হল, ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে দ্রুত আইসিইউ চালু করা, অ্যাফেরেসিস মেশিন স্থাপনসহ পূর্ণাঙ্গ ব্লাড ব্যাংক স্থাপন, হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি, স্থায়ী ডেঙ্গু ইউনিট গঠন, ডেঙ্গু রোগীদের অন্যত্র রেফার্ড করা বন্ধ করা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, “বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন দিকে অব্যবস্থাপনা দৃশ্যমান। নারায়ণগঞ্জবাসী যথাযথ স্বাস্থ্য সেবা থেকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত হচ্ছে। ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে পরিত্রাণের জন্য সরকারী উদ্যোগ বলা চলে অকার্যকর, অপ্রতুল এবং দায়সারা। রাষ্ট্রের কাছ থেকে যথাযথ স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া জনগণের সাংবিধানিক অধিকার হলেও নারায়ণগঞ্জবাসী তা পাচ্ছে না। ভিক্টোরিয়া হাসপাতালটি আপনাদের নিয়ন্ত্রণাধিন অথচ এখানে আইসিইউ সেবা বন্ধ হয়ে আছে। এখানে ‘অ্যাফেরেসিস মেশিন’সহ পূর্ণাঙ্গ বøাড ব্যাঙ্ক না থাকায় ডেঙ্গু রুগীসহ অন্যন্য রুগীদের ঢাকা গিয়ে উচ্চ মূল্যে সেবা নিতে হয়। যা সাধারণত বহু রুগীর পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিনিয়ত এখানে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। বিগত সময় পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় প্রায় সারা বছরই এখানে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে স্থায়ী কোন ডেঙ্গু ইউনিট নাই। ডেঙ্গুর জন্য স্থয়ী ভবে ইউনিট তৈরি করা আজকে সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে হাসপাতালটিতে আসন সংখ্যাও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এ হাসপাতালের পরিবেশ অপরিচ্ছন্ন, অস্বাস্থ্যকর এবং ডেঙ্গুর লার্ভা তৈরির জন্য যথেষ্ট উপযোগী। বিভিন্ন অনিয়ম এই ভিক্টোরিয়া হাসপাতালটিকে দীর্ঘদিন ধরে আচ্ছন্ন করে রেখেছে।”
সাক্ষাৎকালে সিভিল সার্জন ডা. আ.ফ.ম মশিউর রহমান সংগঠন প্রতিনিধিদের দাবি মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং বলেন, “আমার নিয়ন্ত্রণাধীন বিষয়গুলো তাৎক্ষণিকভাবে সমাধানের উদ্যোগ নেব। অন্যান্য বিষয়গুলোও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সহযোগিতায় সমাধানের চেষ্টা করা হবে।”