চেম্বার রোডে বাসের নৈরাজ্য বন্ধের দাবি

নারায়ণগঞ্জ শহরের এক নম্বর রেলগেইট থেকে দুই নম্বর রেলগেইট পর্যন্ত চেম্বার রোডে বন্ধন, উৎসবসহ বিভিন্ন পরিবহনের বাস থামিয়ে রেখে যানজট সৃষ্টিকে ‘পরিবহন নৈরাজ্য’ উল্লেখ করে তা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন নাগরিক কমিটির নেতারা।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের দুই নম্বর রেলগেট এলাকায় ফজর আলী ট্রেড সেন্টারের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন এ দাবি জানান তারা।
একই সাথে নারায়ণগঞ্জকে মেট্রো রেলের অন্তর্ভুক্ত, চাষাঢ়া মোড় প্রশস্তকরণ এবং চেম্বার রোডের জমি রেলওয়েকে হস্তান্তর না করারও দাবি জানায় নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটি।
সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট এবি সিদ্দিকের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিপিবি জেলা সভাপতি শিবনাথ চক্রবর্তী, ন্যাপ জেলা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আওলাদ হোসেন, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতি ধীমান সাহা জুয়েল, নাগরিক কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম জহির, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরউদ্দিন আহমেদ, নাসিকের সাবেক কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ্বাস, বাসদের জেলা সদস্য সচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, মহিলা পরিষদের জেলার আন্দোলন সম্পাদক শাহানারা বেগম, নাগরিক কমিটির কোষাধ্যক্ষ হাফিজুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের মহানগরের সদস্যসচিব পপি রানী সরকার, নাগরিক কমিটির সদস্য মজিবুর রহমান আকন্দ, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ফারুক মহসিন, প্রকৃত ও জীবনের উপদেষ্টা মো. তারিক বাবু প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, চেম্বার রোডে সবগুলো বাস সারিবদ্ধভাবে থামিয়ে রাখা হয়। এটিকে বাসস্ট্যান্ড বানিয়ে ফেলা হয়েছে। এমনভাবে বাসগুলো রাখা হয় অন্য কোনো যানবাহন সেখান দিয়ে আর যেতে পারে না। প্রশাসনের চোখের সামনে থাকা এই ধরনের নৈরাজ্য চলতে থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
মুক্তিযোদ্ধা নূর উদ্দিন বলেন, ‘দুইমাস আগে সামাজিক, ব্যবসায়ীক সংগঠন, জেলা প্রশাসন ও ট্রাফিক পুলিশের সাথে একটি বৈঠক করি, বৈঠকে কথা হয় কী করলে দুই নম্বর রেলগেট যানজট মুক্ত রাখা যায়। সেখানে একটি নকশাও আঁকা হয়েছিল। এবং তারা দু’টি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল একটি স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী কিন্তু বস্তবায়ন হয়নি।
তিনি আরও বলেন, ‘জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন বা পৌর প্রশাসনই বলি, এগুলো আমাদের সাথে প্রভুর মতো আচরণ করে। আসলে তারা আমাদের সেবক। আমাদের ট্যাক্সের টাকায় তাদের বেতন হয়। সুতরাং তাদের কাজ আমাদের সেবা প্রদান করা। আমরা ফুটপাত দিয়ে চলতে চাই এবং শহরের সকল রাস্তাগুলো যানজট মুক্ত চাই। এতে যা করণীয় প্রয়োজন তা আপনারা করবেন সেই দাবি জানাচ্ছি।’
অ্যাডভোকেট এবি সিদ্দিক বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জবাসী যানজটের দুর্ভোগে অতিষ্ঠ। বাসগুলো ওদের সময় মতো ছাড়ে এবং চাষাঢ়া পর্যন্ত জায়গায় জায়গায় দাড়িয়ে থাকে। ফলে শহরে বাড়তি যানজট সৃষ্টি হয়। প্রশাসন কিছু করে নাই, ডিসি প্রায় বছর ধরে আছেন এই পর্যন্ত একটি কাজও সে পরিপূর্ণ করতে পারেনি।’
নাসিকের সাবেক প্রশাসনকে সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক আমাদের সাথে পরপর আলোচনার শেষ পর্যায়ে উনি একমত হলো যে, নারায়ণগঞ্জে যানজটের মূল কারণ ইজিবাইক বা অটো, এগুলোকে একটা কিছু করতে হবে। আমরা বলেছিলাম আপনি এই অবৈধ ব্যাটারি চালিত রিকশা ও অটোগুলোকে বন্ধ করবেন। বৈধ লাইসেন্স দিবেন না বলে একমত হয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীকালে ১৭ হাজার অটো লাইসেন্স দিয়ে চলে গেছে। তারা কথায় এক, কাজে আরেক। ডিসি ও নাসিক প্রশাসনের ভিতরে মানষিকভাবে আন্তরিকতার অভাব ছিল। তাদের উদ্দেশ্য নারায়ণগঞ্জবাসীকে কষ্ট দেওয়া।’
তিনি আরও বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে মেট্রোরেল আসার কথা কিন্তু কোন অদৃশ্য শক্তির কারণে এটি বাতিল করা হয়েছে। এই নারায়ণগঞ্জ রাজস্ব আদায়ে দেশে তৃতীয়। কিন্তু এই শহরকে বাতিল করে তারা প্রকল্প নিচ্ছে, এটাকি তোমাদের বাপের টাকায় হবে? এই প্রকল্প জনগণের টাকায় হবে সুতরাং নারায়ণগঞ্জকে এমআর-২ থেকে বাদ দেওয়া চলবে না।’