এমআরটি লাইন-২ প্রকল্পে নারায়ণগঞ্জকে যুক্ত করার দাবি

ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-২ প্রকল্পে রাজধানীর সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ শহরকে যুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তা নাহলে হরতাল ও লংমাচ করার হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।
বোরবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সামনে ‘ওয়ার্কিং ফর বেটার নারায়ণগঞ্জ’ ব্যানারে বিভিন্ন পেশাজীবী, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের অংশগ্রহণে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব বলেন, ‘দীর্ঘ ১৬ বছর স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, জনপ্রতিনিধিরা দেশের স্বার্থ চিন্তা না করে লুটপাটে মগ্ন ছিল। তার প্রেক্ষিতে ঢাকার আশে-পাশের ৫ থেকে ৬টি জেলা সংযুক্ত হলেও পাশের গুরুত্বপূর্ণ জেলা হওয়া সত্ত্বেও সবসময় আমরা বঞ্চিত হয়েছি। বঞ্চনার দিন শেষ আগামীর বাংলাদেশে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা আমাদের সকলের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জকে এমআরটি লাইন-২ প্রকল্পে যুক্ত করতে হবে। এটি রাজনৈতিক দলের দাবি নয়, এটি নারায়ণগঞ্জবাসীর দাবি।’
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, ‘গত ১৬ বছর ছিল ফ্যাসিস্ট সরকার। নারায়ণগঞ্জে গডফাদারদের ইশারায় বিভিন্ন পরিকল্পনা হতো কিন্তু এখন কোন ফ্যাসিস্ট নাই। যদি সরকারি কোন দপ্তরে ফ্যাসিস্টদের প্রেতাত্মা হিসেবে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে বাধাগ্রস্থ করেন তাহলে নারায়ণগঞ্জবাসী বসে থাকবে না।’
সিপিবি জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘মেট্রোরেল প্রকল্প যখন চালু হয়েছে, তখন নারায়ণগঞ্জ সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ছিল। নারায়ণগঞ্জ এমআরটি লাইন-২ প্রকল্পে যুক্ত থাকার কথা কিন্তু পরিবহন মাফিয়াদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী আমাদের বঞ্চিত করার চেষ্টা হচ্ছে।’
মহানগরীর জামায়াতের আমীর মাওলানা আবদুল জব্বার বলরন, ‘নারায়ণগঞ্জের মানুষের প্রয়োজনীয় এবং যানজটের নগরী থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এমআরটি লাইন-২ প্রকল্পে যুক্ত করতে যা যা করা প্রয়োজন তা করতে প্রস্তুত রয়েছি।’
গণসংহতি আন্দোলন জেলার সমন্বয়কারী তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যা অনেক গুণ বেশি। প্রতিদিন ৩ লাখ মানুষ ঢাকা যাতায়াত করে। যে সক্রিয় লাইন আছে, সে লাইনে মাত্র ৪ লাখ যাত্রী যাতায়াতের জন্য মতিঝিল থেকে উত্তরা এমআরটি-৬ হতে পারে। তাহলে ৩ লাখ মানুষের জন্য নারায়ণগঞ্জে এমআরটি-২ হতে পারে। সুতরাং অলাভজনক বা অন্যকিছু অজুহাতের কথা বলে এমআরটি-২ প্রকল্প থেকে নারায়ণগঞ্জকে বাদ দেওয়া যাবে না।’
মেট্রোরেলের জন্য সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে নাসিক ১৩ নাম্বার ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেন, ‘শুধু মিছিল মিটিং করলে হবে না। নারায়ণগঞ্জকে বাদ দিয়ে মেট্রোরেলের পরবর্তী কর্যক্রম সম্ভব না। অনেকেই বলে এই রুট লাভজনক না, সরকারি কোন ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান না এটা মনে রাখতে হবে। সরকার একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এখানে লাভ লসের কোন বিষয় না। জনগণের কল্যাণে কাজ করা সরকারের দায়িত্ব।
জাহিদ হাসানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা মাঈনুদ্দিন আহমাদ, ইসলামী আন্দোলন মহানগরের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর উদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টি, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন সেন্টু, গণসংহতি আন্দোলনের জেলার নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস, মহানগর নির্বাহী সমন্বয়কারী পপি রানী সরকার, মহানগর খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস আহমেদ, মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার মাহমুদ বকুল, ছাত্র ফেডারেশন জেলা সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা।
আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর কৃষক দলের সিনিয়র সহসভাপতি নাজমুল কবির নাহিদ, দপ্তর সম্পাদক শওকত খন্দকার, বন্দর থানা যুবদল নেতা আমীর হোসেন, জুয়েল রানা, এনায়েত নগর বিএনপির সহসভাপতি সাইফুল প্রধান, বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদিন, মহানগর ছাত্রলের সহসাধারণ সম্পাদক আশ্রাফুল ইসলাম নিরব।