১৬ নভেম্বর ২০২৫

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ২১:২৪, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

আপডেট: ২১:২৫, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

সিদ্ধিরগঞ্জে ৪ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে বলাৎকার, ৪ লাখ টাকায় মীমাংসা!

সিদ্ধিরগঞ্জে ৪ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে বলাৎকার, ৪ লাখ টাকায় মীমাংসা!

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি মাদ্রসার ৪ শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক শরীফুল ইসলাম ইব্রাহিমীমের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষককে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় এবং স্থানীয় সাবেক ১ কৃষক দল নেতাসহ বিচারক ও গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে সেই টাকা ভাগবণ্টন করা হয়।

ঘটনাটি ঘটে আটি হাউজিং এলাকার জমজম টাওয়ারে নূরে মদিনা তাহফিজুল কুরআন মাদ্রাসায়। অভিযুক্ত শিক্ষক আগে দুই শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজত বাস করেছেন। তখন স্থানীয়রা তাকে গলায় জুতার মালা পড়িয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছিলেন।

অভিযোগ উঠেছে, শিক্ষক শরীফুল মাদ্রাসার একেক শিক্ষার্থীকে একেক দিন তার কক্ষে ডেকে নিয়ে বলাৎকার করতেন। চার শিক্ষার্থীকে বলাৎকার করার পর পঞ্চম শিক্ষার্থীকে বলার সময় ঘটনা প্রকাশ পায়। ফলে, ১২ নভেম্বর ভিকটিমদের অভিভাবকসহ সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সাবেক কৃষক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির মোল্লা এবং এলাকার লোকজন অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করার সিদ্ধান্ত নেন।

এসময় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনায় করা মামলার আসামি স্থানীয় প্রভাবশালী দেলোয়ার ওরফে পল্টি দেলোয়ার সালিশে বসেন। সালিশে উপস্থিত ছিলেন জাকির মোল্লা, ফরিদ মাস্টার, জালাল, ভিকটিমদের পরিবার এবং অভিযুক্ত শিক্ষকের পিতা। বৈঠকে শিক্ষককে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

৪ ভিকটিমের পরিবারকে ১ লাখ টাকা (২৫ হাজার করে) ও উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের ৩০ হাজার টাকা এবং বাকি টাকা বিচারকরা ভাগবণ্টন করে নেয় বলে অভিযোগ ওঠে। একটি ভিকটিম পরিবার টাকা নিতে অস্বীকৃতি জানায়, ফলে সালিশের গোপনীয়তা প্রকাশ পায়।

ভুক্তভোগী পরিবারের একজন বলেন, “টাকার বিনিময়ে এমন জঘন্য অপরাধের বিচার বন্ধ করা উচিত নয়। অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা দরকার।”

অভিযুক্ত শিক্ষকের পিতা সামসুল হক তালুকদার যোগাযোগ করতে অনিহা প্রকাশ করেছেন এবং হাউজিং এলাকার দেলোয়ার ও ফরিদ মাস্টারের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন।

ফরিদ মাস্টার বলেন, ভিকটিমদের মধ্যে একজন সেনাবাহিনীর সদস্যের নাতি। পুলিশ তাদেরকে সামাজিকভাবে মীমাংসা করার পরামর্শ দেয়।

দেলোয়ার বলেন, জোহরের নামাজ শেষে জাকির মোল্লাসহ এলাকার কিছু ছেলেপেলে শিক্ষককে ধরে হাউজিং কমিটির অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে জরিমানা করে মীমাংসা করা হয়।

স্থানীয়রা জানায়, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শিক্ষক একই ধরনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন এবং জেলহাজতে ছিলেন। জামিনে বের হওয়ার পরও তার আচরণ অপরিবর্তিত ছিল।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহিনূর আলম বলেন, “ভিকটিমের পরিবারকে সামাজিকভাবে মীমাংসা করার পরামর্শ দেয়া ঠিক হয়নি। পরিবার লিখিত অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

সর্বশেষ

জনপ্রিয়