বন্দরে রাহিম হত্যা মামলার আসামির বাড়িতে হামলা

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় হত্যা মামলার আসামির বাড়িতে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত সোমবার (৫ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে উপজেলার মুছাপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে বলে বন্দর থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে হত্যা মামলার বাদীসহ তাদের আত্মীয়-স্বজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
গত ৩০ এপ্রিল রাত দুইটার দিকে পিকআপ চালক শহিদুল ইসলাম রাহিম নামে এক তরুণকে ‘চোর’ আখ্যা দিয়ে মারধর করা হয়। সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ২০ বছর বয়সী রাহিম।
নিহত রাহিম বন্দর উপজেলার বারপাড়া এলাকার শাহাবুদ্দিনের বাড়ির ভাড়াটিয়া হাবিবুর রহমানের ছেলে।
এই ঘটনায় পরদিন তার মা রাশিদা বেগম বাদী হয়ে বন্দর থানায় ১১ জনকে এজাহারনামীয় এবং ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
হত্যা মামলাটির আসামিরা হলেন: মো. ইকবাল হোসেন (২৫), সালাউদ্দিন (৪৫), শিল্পী আক্তার (৩৮), হাসিব (২০), হিমেল (২১), মাকসুদ (২২), আমজাদ হোসেন (২৫), জামান (২৮), রহমত আলী (৪৫), হাবিব উল্লাহ (৩০), এবং বাধন (২৫)।
এদিকে, এ মামলার আসামি সালাউদ্দিনের বাড়িতে সোমবার সন্ধ্যায় হামলা চালায় বাদীপক্ষের লোকজন। এ সময় বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোর পাশাপাশি দুই শিশুকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ তুলেছেন তাদের স্বজনরা।
উল্লেখ্য, হত্যা মামলাটিতে সালাউদ্দিন, তার স্ত্রী শিল্পী আক্তার ও ছেলে হাসিবও আসামি। তারা পলাতক রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
হামলার ঘটনায় সালাউদ্দিনের বোন শাহানাজ বন্দর থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগে বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় তার ভাই সালাউদ্দিন ও তার স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না। ওই সময় অভিযুক্তরা বাড়িতে দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় এবং ভাঙচুর-লুটপাট করে।
অভিযোগে মামলার বাদী রাশিদা বেগম ছাড়াও ১০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এর আগে বিকেলে রাহিম হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বারপাড়া এলাকায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনের পর এই হামলার ঘটনা ঘটে।
মুঠোফোনে সালাউদ্দিনের ভাগ্নে ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সংগঠক আব্দুল হামিদ শ্যামল বলেন, “মামলায় আসামি হওয়াতে আমার মামা ও মামি বাড়িতে ছিলেন না। ওই সময় বাড়িতে ছিলেন তার এসএসসি পরীক্ষার্থী কন্যা ও ১২ বছর বয়সী ছেলে ছিল। হামলাকারীরা তাদের মারধর করে ও লুটপাট চালায়। অতর্কিতভাবে তারা এই হামলা চালায়।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, “রাহিম হত্যা মামলার এক আসামির বাড়িতে হামলার অভিযোগ পেয়েছি আমরা। বিষয়টি প্রাথমিকভাবে তদন্ত করছি। পুলিশ ঘটনাস্থলেও গিয়েছিল। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”