১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ২১:২০, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দুর্গাপূজা: প্রতিমা তৈরির ব্যস্ততায় মৃৎ শিল্পীরা

দুর্গাপূজা: প্রতিমা তৈরির ব্যস্ততায় মৃৎ শিল্পীরা

আর কিছুদিন পরই শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। ইতোমধ্যে শহরের মন্ডপ, মন্দিরগুলোতে পূজার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। ভক্তদের হৃদয় ছুঁতে নিপুণ হাতে কাজ করছেন তারা। তবে সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে প্রতিমা শিল্পীদের ব্যস্ততা।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে শহরের নিতাইগঞ্জ, উকিলপাড়া, দেওভোগ আখড়াসহ বিভিন্ন মন্ডপ ঘুরে দেখা যায়, মন্দিরগুলোতে প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন মৃৎশিল্পীরা।

কারিগরি হাতের শৈল্পিক ছোঁয়ায় ইতোমধ্যে বাঁশ, খড় ও কাদা মাটির দিয়ে তৈরি করেছেন প্রতিমার কাঠামো। এখন  চলছে মাটির কাজ। দুর্গার পাশপাশি তৈরি হচ্ছে লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ, কার্তিক এবং তাদের বাহন পেঁচা, হাস, মুষক (ইদুর) আর ময়ূরের প্রতিমা। কেউ কেউ আবার ব্যস্ত অজন্তা প্রতিমায় শৈল্পিক ও নিখুদ মাটির কাজে।

মৃৎ শিল্পীরা জানান, শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে শ্রাবণ, ভাদ্র ও আশ্বিন এই তিন মাসকে প্রতিমা তৈরির মৌসুম হিসেবে গণ্য করেন তারা। সারাবছর টুক-টাক কাজ থাকলেও এই সময়ে দুর্গাপূজা কেন্দ্রীক ব্যস্ততা থাকে তাদের। আর এই সময়েই হিন্দুদের মধ্যে তাদের বেশ কদর দেখা যায়।

নিতাইগঞ্জে অবস্থিত শ্রী শ্রী বলদেব জিউর আখড়া ও শিব মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, কাঠামো তৈরি শেষে প্রতিমার সজ্জা নিয়ে ব্যস্ত শিল্পী সুমন চন্দ্র পাল। তিনি বলেন, ‘আমরা গত তিন মাস যাবত প্রতিমা তৈরি করে যাচ্ছি। পূজার সময় চলে আসায় এখন ব্যস্ততা একটু বেশি। এজন্য আমরা দিন-রাত কাজ কাজ যাচ্ছি। ফলে যে প্রতিমাগুলো অর্ডার নিয়েছি আশা করি খুব দ্রুত কাজ শেষ করে বুঝিয়ে দিতে পারবো। এখন কাজ বাকি শুধু রঙ করা ও শাড়ি পড়ানো।’

এ বছর ১২টি মন্ডপের জন্য প্রতিমা তৈরি করছেন বলে জানান এই মৃৎশিল্পী। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য বছরের তুলনায় প্রতিমা তৈরির সরঞ্জামের দাম অনেকে বেড়েছে। আর সে অনুযায়িই প্রতিমার মূল্য নির্ধারণ করে কাজ করছি।’

দেওভোগে অবস্থিত শ্রী শ্রী রাজা লক্ষীনারায়ণ বারোয়ারী পূজা মন্ডপের প্রতিমা শিল্পী অজয় পাল বলেন, ‘আমরা এখনো মাটির কাজ করে যাচ্ছি। যাতে কোনো ত্রুটি না থাকে সেজন্য সময় নিয়ে দিন রাত কাজ করছি। তাছাড়া আমরা আরো কয়েকটি প্রতিমার অর্ডার নিয়েছি সেগুলোর কাজও প্রায় শেষ।’

অন্যদিকে উকিলপাড়া হোসিয়ারি পূজা মন্ডপে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিমার রঙ করছেন শিল্পী তপন পাল। তিনি বলেন, ‘এই প্রতিমার সম্পূর্ণ কাজ কয়েকদিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। সময় কাছে আসার কারণে আমরা খুব দ্রুত কাজ শেষ করছি।’
এ বছর শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে জেলায় ২২৩ টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। যার মধ্যে সদর উপজেলায় ৭৯ টি, বন্দর উপজেলায় ২৯টি, সোনারগাঁয়ে ৩৫ টি, আড়াইহাজারে ৩৬টি এবং রূপগঞ্জে ৪৪ টি। 

নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপনে নিশ্চিতের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দফায় দফায় সনাতন নেতাদের সঙ্গে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বুধবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক প্রস্তুতি সভায় পূজা মন্ডপগুলোতে নিরাপত্তার বিষয়গুলো গুরুত্বারোপ করা হয়। পাশাপাশি দুর্গাপূজার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল রকম প্রস্তুতি থাকবে আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার। শনিবার শহরের কয়েকটি পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করে দুর্গাপূজাকে ঘিরে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে বলেও জানান এসপি জসীম উদ্দিন।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়