পাসপোর্ট অফিসের কার্যক্রম শুরু, সেবা প্রত্যাশীদের দীর্ঘ লাইন

নারায়ণগঞ্জের পাসপোর্টসেবাগ্রহীতাদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান ঘটিয়ে পুনরায় চালু হলো নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস। রোববার (৪ মে) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে অফিসের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
এদিন সকাল থেকেই সশরীরে আবেদন, বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্টসহ সব ধরনের পাসপোর্ট সেবা গ্রহণে পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়।
এর আগে গত ৩০ এপ্রিল রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়।
পাসপোর্ট অফিসের কার্যক্রম পরিদর্শনে এসে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, “নারায়ণগঞ্জ একটি শিল্পাঞ্চল ও ঘনবসতিপূর্ণ জেলা। এখানকার বহু মানুষ পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে যান, বিশেষ করে শ্রমজীবী শ্রেণি। তাই এই অফিস পুনরায় চালু হওয়ায় মানুষের বড় ভোগান্তির অবসান হলো।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই পাসপোর্ট অফিসটি দালালমুক্ত থাকুক। কেউ যেন অপ্রয়োজনীয়ভাবে হয়রানির শিকার না হন। সেবাপ্রত্যাশীরা যাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেবা পান, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।”
আগের রোহিঙ্গা পাসপোর্ট ইস্যু প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বলেন, “বাংলাদেশি না হয়েও কেউ যদি পাসপোর্ট নেওয়ার চেষ্টা করে বা এমন অভিযোগ আসে, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি দালাল নির্মূলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার কথাও জানান তিনি।”
অফিস কার্যক্রম সম্পর্কে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মো. জামাল হোসেন বলেন, “দীর্ঘ ৯ মাস পর পাসপোর্ট কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে শুরু হয়েছে। আগুনে পুড়ে যাওয়া পাসপোর্টগুলোর মধ্যে যেগুলো অক্ষত ছিল, সেগুলো আগারগাঁও থেকে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। কেউ যদি তার পুরনো পাসপোর্ট না পেয়ে থাকেন, তাহলে নারায়ণগঞ্জ অফিস কিংবা আগারগাঁও অফিসে যোগাযোগ করলে তা সংগ্রহ করতে পারবেন।”
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে নারায়ণগঞ্জ সাইনবোর্ড সংলগ্ন আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। এতে অফিস ভবন, আসবাবপত্র এবং প্রক্রিয়াধীন প্রায় পাঁচ হাজার পাসপোর্ট নষ্ট হয়ে যায়।
ঘটনার পর সেবা বন্ধ থাকলেও বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলাকে তিনভাগে ভাগ করে কেরানীগঞ্জ, নরসিংদী ও মুন্সীগঞ্জ অফিস থেকে সেবা চালু রাখা হয়। দীর্ঘ অপেক্ষার পর এখন নিজ জেলার অফিসেই স্বাভাবিকভাবে সেবা পাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জবাসী।