বেকারত্ব, দুর্নীতি ও মব সন্ত্রাসে জনগণ অতিষ্ঠ: বজলুর রশীদ

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট ও চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রয়াত জাহেদুল হক মিলুর ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৩ জুন) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে জেলা কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
২০১৮ সালের এই দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন জাহেদুল হক মিলু। তাঁকে স্মরণ করতে আয়োজিত সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব।
স্মরণসভায় আরও বক্তব্য রাখেন—গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি জামাল হোসেন, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আক্তার, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আহ্বায়ক প্রদীপ সরকার এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক নাছিমা সরদার।
আলোচনা শুরুর আগে মিলুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে বাসদ, শ্রমিক ফ্রন্ট, ছাত্র ফ্রন্ট, মহিলা ফোরাম ও চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
প্রধান বক্তা বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, “কমরেড মিলু ছিলেন বাংলাদেশের বিপ্লবী আন্দোলনের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। দল ও বিপ্লবের স্বার্থই তার কাছে ছিল সর্বাগ্রে। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি ছিলেন অটল, নিঃস্বার্থ ও লড়াকু।” তিনি আরও বলেন, “কমরেড মিলুর জীবনের দর্শন, আত্মত্যাগ ও লড়াই এদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য এক উজ্জ্বল শিক্ষা হয়ে থাকবে।”
বর্তমান দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, “নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে শ্রমজীবী মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বেকারত্ব, দুর্নীতি ও মব সন্ত্রাসে জনগণ আজ অতিষ্ঠ। অথচ প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে এসব সংকটের উল্লেখমাত্র নেই।”
তিনি রাখাইন করিডোর প্রসঙ্গে বলেন, “জনমত উপেক্ষা করে করিডোর বাস্তবায়নের চেষ্টা জনগণের জন্য উদ্বেগজনক। আর নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের কাছে হস্তান্তরের বিষয়টি দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। যারা এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে, তাদের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে আসলে মব সন্ত্রাসকেই উৎসাহিত করা হচ্ছে।”
নির্বাচন ইস্যুতে তিনি বলেন, “দেশের জনগণ ও অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এ বছরের মধ্যেই একটি নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর দেখতে চায়। অথচ প্রধান উপদেষ্টা ২০২৬ সালের এপ্রিল নির্বাচন করার কথা বলছেন, যা গ্রহণযোগ্য নয়। এতে বোঝা যায়, তিনি নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন এবং বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছেন।”
শেষে তিনি ডিসেম্বরের আগেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজন এবং দেশের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সকল বাম-প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।