রূপগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে যুবকের মৃত্যু

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এক ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে মামুন ভূইয়া (৩২) নামের এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১০ জুন) বিকেলে উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের মাঝিপাড়া এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই যুবকের মৃত্যু হয়।
নিহত মামুন মাঝিপাড়া এলাকার আব্দুল মন্নাফের ছেলে এবং ভুলতা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক বাদল ভূইয়ার ছোট ভাই। তিনি পেশায় একজন গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ী।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভুলতা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক বাদল ভূইয়া বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপুর অনুসারী। অন্যদিকে, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমানের ভাতিজা জেলা ছাত্রদলের সাবেক প্রচার সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ওরফে বাবু রাজনীতি করেন কেন্দ্রীয় কমিটির আরেক সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের সঙ্গে। দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।
মঙ্গলবার বিকেলে ভুলতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির হোসেন ওরফে খোকাকে স্থানীয় লোকজন আটক করলে সেখানে বাদল ভূইয়ার অনুসারীরাও উপস্থিত হন। আটকের পর সাব্বিরকে বাদলের বাড়ির দিকে নেওয়ার সময় হামলা চালায় জাহিদুল ইসলাম বাবুর নেতৃত্বাধীন গ্রুপ। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ হয়। এক পর্যায়ে বাবু তার লোকজন নিয়ে গুলি করলে মামুন গুলিবিদ্ধ হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত সাড়ে ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। অন্যদিকে লোকজনের হাতে মারধরের শিকার ছাত্রলীগ নেতা আহত সাব্বির হোসেনের পা ভেঙ্গে যাওয়ায় তাকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার পর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (গ সার্কেল) মেহেদী ইসলাম বলেন, “আটক হওয়া সাব্বির হোসেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা এবং সাবেক ছাত্রদল নেতা জাহিদুল ইসলামের বন্ধু। স্থানীয়রা তাকে আটক করলে জায়েদুল তার অনুসারীদের নিয়ে গুলি ছোড়ে বলে আমরা জানতে পেরেছি। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। আটক ছাত্রলীগ নেতাকে স্থানীয়রা গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। তার পা ভেঙে গেছে। রাত নয়টার দিকে বাদল বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। যেহেতু আহতের মৃত্যু হয়েছে এখন একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হবে।'
যোগাযোগ করা হলে অভিযোগ অস্বীকার করেন সাবেক ছাত্রদল নেতা জাহিদুল৷ তিনি বলেন, “আমি শুনেছি ছাত্রলীগের খোকনকে লোকজন ধরছিল৷ সেখানে গোলাগুলি হইছে৷ কিন্তু আমি সেখানে ছিলাম না৷ আমি বাসায় ছিলাম৷”