বন্ধুরা বলেছিল ‘পানিতে ডুবে মৃত্যু’, ময়নাতদন্তে ‘হত্যা’

বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়ে শীতলক্ষ্যায় নিখোঁজ হন দশম শ্রেণির ছাত্র জুবায়ের বিন মোহাম্মদ। সঙ্গে থাকা বন্ধুরা জানিয়েছিল, নদী পারাপারের সময় শীতলক্ষ্যায় নিখোঁজ হন জুবায়ের। কিন্তু তার মৃত্যুর ৪০ দিন পর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে জানা গেছে, পানিতে ডুবে নয় শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরকে। পাওয়া গেছে মাথা ও বুকে আঘাতের আলামত।
ঘটনাটি ঘটেছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায়।
ভুক্তভোগী জুবায়ের এ উপজেলার ভোলাব ইউনিয়নের চারিতালুক এলাকার তপন মিয়ার ছেলে। স্থানীয় ভোলাবো শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তো সে।
গত শুক্রবার এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহতের মা মিনারা বেগম। ওই মামলায় নিহতের তিন বন্ধুসহ চারজনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী।
আসামিরা হলেন: নিহতের প্রতিবেশী মো. নাঈমের ছেলে শাহীন (২০), গাবতলা এলাকার নাজিরের ছেলে রাব্বি (১৯), একই এলাকার ফারুকের ছেলে সিয়াম (১৯) এবং চারিতালুকের হাছেন আলীর ছেলে আক্তার হোসেন (৩৫)।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, ১৮ এপ্রিল বিকেলে বন্ধু শাহীন জুবায়েরকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে ওইদিন সন্ধ্যায় ভোলাব গাবতলা এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর দক্ষিণপাড়ে নিয়ে অপর দুইজন মিলে জুবায়েরকে হত্যা করে। তারা জুবায়েরের মাথায় ও বুকে আঘাত করে এবং শ্বাসরোধে হত্যার পর মরদেহ নদীতে ফেলে দেয়। পরে নিহতের পরিবারকে জানায়, সে নদী পারাপারের সময় পানিতে ডুবে নিখোঁজ হয়েছে। এ প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় আক্তারকে আসামি করা হয়েছে।
পরদিন সকালে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠায় নৌ পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পায় পুলিশ।
এতে বুকে ও মাথায় আঘাতের পর শ্বাসরোধে জুবায়েরের মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর সে বিষয়ে পরিবারকে অবগত করা হলে নিহতের মা বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করছে ইছাপুরা নৌ ফাঁড়ির পুলিশ।
এ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) পরিতোষ সরকার বলেন, “মরদেহ উদ্ধারের পর একটি অপমৃত্যুর মামলা রুজু হয়। ময়নাতদন্তে হত্যার বিষয়টি আসায় হত্যা মামরা রুজু করা হয়েছে। এই মামলার আসামিরা পলাতক রয়েছে। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে।”