০২ জুন ২০২৫

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ২১:১৯, ৩০ মে ২০২৫

ঈদের আগে পূর্ণ বোনাস-বেতনের দাবি শ্রমিক ফ্রন্টের

ঈদের আগে পূর্ণ বোনাস-বেতনের দাবি শ্রমিক ফ্রন্টের

ঈদুল আযহার আগে সকল শ্রমিকের মে মাসের পূর্ণ বেতন, পূর্ণ উৎসব ভাতা এবং বকেয়া পরিশোধের দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। সেই সঙ্গে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা, স্বল্পমূল্যে আবাসন, বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবার জন্য আলাদা বরাদ্দ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

শুক্রবার (৩০ মে) বিকেল ৫টায় নারায়ণগঞ্জ শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে এ মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লব। বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, সহ-সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সোহাগ, রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি জামাল হোসেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, “নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির কারণে শ্রমজীবী মানুষের জীবন এখন অসহনীয়। ঈদ এলেই শ্রমিকরা পরিবার-পরিজনের জন্য কিছু কেনাকাটার আশায় অতিরিক্ত কাজ করেন, অথচ ঠিক সময়মতো বেতন-বোনাস না পেয়ে তাদের সেই আশাও ভেঙে যায়।”

তারা অভিযোগ করেন, সরকার মে মাসের মধ্যে বোনাস পরিশোধের নির্দেশ দিলেও অধিকাংশ কারখানায় এখনও তা বাস্তবায়ন হয়নি। “বেসিক বেতনের অর্ধেক দিয়ে বোনাসের নামে বকশিশ দেওয়া হয়। এই অবস্থা নিরসনে শ্রম আইন সংশোধন করে সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো পূর্ণ উৎসব ভাতা বাধ্যতামূলক করতে হবে।”

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ৭ জুন ঈদুল আযহা। এর আগে মে মাসের সম্পূর্ণ বেতন ও বোনাস পরিশোধ করতে হবে। যে মালিক প্রতিষ্ঠান বেতন-বোনাস পরিশোধে গড়িমসি করবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে শ্রমিক অসন্তোষের দায় মালিক ও প্রশাসনকেই নিতে হবে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, আগামী ২ জুন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার কথা রয়েছে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যমতে প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার বাজেট দেওয়া হবে, কিন্তু প্রতি বছরই দেখা যায়, শ্রমিকদের কল্যাণে বাজেটে কোনো উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ রাখা হয় না।

তারা বলেন, “বছর বছর বাজেটের আকার বাড়লেও শ্রমিকদের খাদ্য নিরাপত্তা, আবাসন বা চিকিৎসার কোনো নিশ্চয়তা নেই। বরং কর ও ঋণের বোঝা বাড়িয়ে মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি করা হচ্ছে, যার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষ।”

এছাড়া সমাবেশ থেকে বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল এবং এই আইনে গ্রেপ্তার হওয়া শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানানো হয়।

নেতৃবৃন্দ বলেন, “শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির পক্ষে আন্দোলন করায় গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি সেলিম মাহমুদ, রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তার, চট্টগ্রামে বাসদ ইনচার্জ আল কাদেরী জয়, ছাত্র ফ্রন্ট সভাপতি মিরাজউদ্দিন ও রিকশা শ্রমিক নেতা রোকনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়েছে।”

তারা বলেন, “১৯৭৪ সালের এই কালো আইন অতীতে বহুবার গণআন্দোলন দমন করতে ব্যবহৃত হয়েছে। এখন একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসে শ্রমিক আন্দোলন দমনে এই আইন ব্যবহার করছে—এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

সমাবেশ থেকে নেতারা অবিলম্বে এই আইন বাতিল এবং সংশ্লিষ্ট নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়