জিয়ার কোটি টাকা বরাদ্দে শুরু নারায়ণগঞ্জ উন্নয়নের পথচলা
শিল্প ও বন্দর নগরী নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে ১৯৭৭ সালেই এক কোটি টাকার বরাদ্দ ঘোষণা করেছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও তৎকালীন প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জিয়াউর রহমান। সে সময়ের অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে এই বরাদ্দ ছিল বিপুল অঙ্কের। বাংলাদেশের ১৯৭৭-৭৮ অর্থবছরের মোট বাজেট যেখানে ছিল প্রায় ২,০৮৭ কোটি টাকা, সেখানে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নের জন্য এককভাবে এক কোটি টাকার ঘোষণা ছিল তাৎপর্যপূর্ণ।
ঘোষণার অংশ হিসেবে তিনি নারায়ণগঞ্জে একটি দুইশ শয্যার হাসপাতাল, স্টেডিয়াম, টাউন হল, গ্রন্থাগার, আধুনিক পার্ক, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, এবং আবাসিক এলাকায় বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন পরিকল্পনার কথা জানান। একইসঙ্গে তিনি একটি উন্নয়ন কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন এবং নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রকল্প প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
নারায়ণগঞ্জের মানুষের প্রত্যাশা পূরণে জিয়াউর রহমানের এই সময়োপযোগী উদ্যোগকে অনেকেই এখনো নারায়ণগঞ্জ উন্নয়নের সূচনা পর্ব হিসেবে দেখেন।
১৯৭৭ সালের ৮ এপ্রিল প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জিয়াউর রহমান নারায়ণগঞ্জ পৌর মিলনায়তনে এলে নারায়ণগঞ্জের মানুষ চাষাঢ়া বালুর মাঠে এক সভার আয়োজন করে। বৃহত্তর নারায়ণগঞ্জ উন্নয়ন কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এ সভায় নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে এক কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা দেন।
ওই সভায় তৎকালীন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার, ঢাকা জেলা প্রশাসক, নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান ও মেজর জেনারেল মীর শওকত আলীও উপস্থিত ছিলেন।
সেনাপ্রধানের সামনে ওই সময় বৃহত্তর নারায়ণগঞ্জ উন্নয়ন কমিটি একটি রিপোর্ট পড়ে শোনান। তাতে উল্লেখ করা হয়, শিল্প ও বন্দর নগরী হিসেবে দেশের অর্থনীতিতে নারায়ণগঞ্জ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও এখানে উন্নয়ন তেমন একটা হয়নি। নারায়ণগঞ্জ অবহেলিত জনপদ হিসেবে রয়ে গেছে। বিগত সময়ে কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন হলেও সার্বিকভাবে উন্নয়ন হয়নি।
পরে সামরিক প্রশাসক জিয়াউর রহমান যিনি পরে রাষ্ট্রপতি হন নারায়ণগঞ্জ নগরীর উন্নয়নে এক কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা দেন। শিল্পনগরী নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন প্রসঙ্গে জেনারেল বলেন, “শীঘ্রই সরকার এ ব্যাপারে (নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন) পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।”
নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নকল্পে একটি উন্নয়ন কমিটি গঠন করার কথাও জানান তিনি। জেনারেল জিয়া বন্দরের বিভিন্নমুখী উন্নয়ন সম্বলিত একটি পূর্ণাঙ্গ প্রকল্প তৈরির নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, “কমিটি এ উন্নয়ন প্রকল্প বিশেষভাবে বিবেচনা করে দেখবে।”
