২৭ জুন ২০২৫

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ২১:৩৭, ২৬ জুন ২০২৫

বাস চালকদের নিয়োগপত্র ও পোশাক বাধ্যতামূলক করার আহ্বান

বাস চালকদের নিয়োগপত্র ও পোশাক বাধ্যতামূলক করার আহ্বান

সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বাস চালকদের জন্য নিয়োগপত্র ও নির্দিষ্ট পোশাক বাধ্যতামূলক করার আহ্বান জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ। তিনি বলেন, “প্লেন, ট্রেন, জাহাজ চালকদের নিয়োগপত্র থাকে। বাস চালকদের কেন থাকবে না? একটি বাসে গড়ে ৫০ জন যাত্রী থাকে। এদের জীবনের দায়িত্ব যিনি নেন, তার পরিচয়, নিয়োগ নিশ্চিত না করলে সেটি আমাদের দায়িত্বহীনতা।”

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকেলে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, চালকদের জন্য নির্দিষ্ট পোশাক থাকা দরকার। এতে দায়িত্ববোধ বাড়বে, পেশাদারিত্ব তৈরি হবে এবং পরিচয় থাকায় যাত্রীদের দিক থেকেও সম্মান পাওয়া যাবে। চালকরা মনে করেন, পোশাক থাকলে দুর্ঘটনার সময় তারা চিহ্নিত হয়ে পড়বেন। কিন্তু সঠিক পরিচয় থাকলে আক্রমণের প্রবণতা কমে আসবে বলেই মন্তব্য করেন তিনি।

বাস মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মামুন মাহমুদ বলেন, “কমপক্ষে দুটি পোশাক—গরম ও শীতের জন্য—মালিকদেরই সরবরাহ করা উচিত।”

চালকদের নিয়োগের ক্ষেত্রে উদাসীনতার কথাও তুলে ধরেন তিনি। তার মতে, অস্থায়ী ভিত্তিতে চালকদের নিয়োগ দেওয়া হয় বলেই নিয়োগপত্র দিতে মালিকরা আগ্রহ দেখায় না। এক্ষেত্রে তিনি ওয়ে-বিলের মধ্যে চালকদের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেন। এতে চালকের নাম, ঠিকানা, কর্মঘণ্টা এবং দায়িত্বকাল নির্ধারণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি।

দুর্ঘটনা রোধে সড়কে গতি নিয়ন্ত্রণের প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, “লিংকরোডে অতিরিক্ত গতির কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। এখানে স্পিড গান বা সিসিটিভি ক্যামেরা বসালে দুর্ঘটনা কমে আসবে।”

একটি দুর্ঘটনার উদাহরণ দিয়ে মামুন মাহমুদ বলেন, “ভুঁইঘরে এক শিক্ষার্থীকে দ্রুতগামী গাড়ি চাপা দেয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, চালক ব্রেক না করে শিশুটিকে প্রায় ২০০ গজ দূরে নিয়ে ফেলে।”

চালকদের ড্রাগ টেস্ট সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি বলেন, “অধিকাংশ চালকই নেশাসক্ত। তাঁরা গাড়িতে খাওয়া-ঘুমান এবং এমন মানবেতর জীবনে অনেকেই নেশায় জড়িয়ে পড়েন। চালকদের প্রতি তিন মাস অন্তর বিনামূল্যে ডোপটেস্ট করলে ট্রাফিক পুলিশ রাস্তায় লাইসেন্স চেক করার সময় নেশাসংক্রান্ত তথ্যও যাচাই করতে পারবে।”

জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিলুফা ইয়াসমিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী, সিটি কর্পোরেশনের সচিব মো. নূর কুতুবুল আলম, বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমান, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, সাবেক মহানগর জামায়াত আমীর মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমাদ, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, ইসলামী আন্দোলনের নগর সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, গণঅধিকার পরিষদের জেলা সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার নাহিদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) শওকত আলী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলার সদস্য সচিব জাবেদ আলম, পরিবহন সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ প্রমুখ।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়