বাঘ দেখেছেন, বাঘের থাবা দেখেন নাই: হেফাজতের হুমকি

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: ভোলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ শহরে বিশাল জমায়েত নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। হেফাজতে প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ সরকারকে কড়া হুশিয়ারি দিয়ে বক্তারা বলেছেন, ‘এই দেশে কোন কিছু ঘটে না, এখানে ঘটানো হয়। ভোলার ঘটনাও ঘটানো হয়েছে। মুসলিম ভাইদের বুকে নির্বিচারে গুলি করেছে পুলিশ। তারপর বলছে, আইডি নাকি হ্যাক হইছে। প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রীকে বলি সাপ দেখেছেন, সাপের ছোবল দেখেন নাই, বাঘ দেখেছেন কিন্তু বাঘের থাবা দেখেন নাই।’
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) জুমার নামাজের শেষে শহরের ডিআইটি মসজিদের সামনে মহাসমাবেশে বঙ্গবন্ধু সড়কে ট্রাকের উপর অস্থায়ী মঞ্চে বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দ। সমাবেশে যোগ দেয় হেফাজতে ইসলামীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ হাজারো মুসুল্লী। এ সময় বিশাল জনসমাবেশের কারণে শহরের প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়কের একপাশ বন্ধ হয়ে যায়।
মহাসমাবেশকে ঘিরে সতর্ক অবস্থানে ছিল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। সমাবেশ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে র্যাব ও পুলিশ সদস্যের উপস্থিতি দেখা যায়।
সমাবেশে হেফাজতে ইসলাম তিনটি দাবি করেন। দাবিগুলো হলো- ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটুক্তিকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের আইন প্রনয়ন, ভোলার ঘটনায় দায়ীদের ফাঁসি ও ইসকন নিষিদ্ধের ঘোষণা।
বক্তারা বলেন, ‘এদেশে একের পর এক ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। ভারতকে কী দিলেন আর কী আনলেন এ নিয়ে যখন তুমুল আলোচনা তখনই আবরার হত্যা হলো। আবরার নিয়ে যখন আলোচনা তখন ভোলায় আমাদের মুসলিম ভাইদের নির্বিচারে হত্যা করা হলো। প্রধানমন্ত্রী বলি ভোট চুরি করে হোক আর রাতের আধারেই হোক ক্ষমতায় তো আসছেন সুতরাং সব কিছুর দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে।’
হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, ‘ইসলাম নিয়ে কটুক্তিকারীর যদি মৃত্যুদন্ডের আইন না করা হয় তাহলে এই সরকারকে ক্ষমতায় থাকতে দেয়া হবে না। ভোলার ঘটনায় যারা অপরাধী তাদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করুন। ইসকনকে নিষিদ্ধ করেন। এসব দাবি না মেনে নিলে আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো।’
জুনায়েদ আল হাবিব বলেন, শাপলা চত্ত্বরে রক্ত কিন্তু আমরাই দিয়েছি ভুলে যাবেন না। বাঘ দেখেছেন, বাঘের থাবা দেখেন নাই। আপনাকে কিন্তু ভারত ক্ষমতায় রাখতে পারবে না। ভোলার ঘটনায় সঠিক তদন্ত করে বিচার না করলে আপনার ক্ষমতার মসনদ কিন্তু টিকবে না। মুসলমানরা না থাকলে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হতে পারতো না। মুসলমানরা চাইলে ওই ক্ষমতা আবার ছিনিয়েও নিতে পারে। ভোলায় আমার ভাইদের হত্যার পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইডি হ্যাক হয়ে গেছে। সময় থাকতে ঠিক হন নইলে আপনিও হ্যাক হয়ে যাবেন।
সভাপতির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা হেফাজতের আমির আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘আপনি আপনার গদি ঠিক রাখার জন্য যদি এই আইন নিশ্চিত না করেন তাহলে কেয়ামতের ময়দানে আপনার শাফায়েত হবে না। আপনাকে ভারত কোনদিন গদিতে রাখতে পারবে না। আল্লাহ না চাইলে কোন রাষ্ট্র সরকার আপনাকে গদিতে রাখতে পারবে না।’
এ সময় ফেসবুকে ধর্মীয় উস্কানিমূলক স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগে কুমিল্লা থেকে দেওভোগ মাদ্রাসার এক ছাত্রের গ্রেফতারের ঘটনায় নিন্দা ও তার মুক্তির দাবি জানান আব্দুল আউয়াল।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, ওলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন কাসেমী, মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান, জেলা খেলাফত মজলিসের সভাপতি সিরাজুল মামুন প্রমুখ।
প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম