নানান দাবিতে বাম জোটের রোডমার্চ
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুড়িং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া, কথিত মানবিক করিডোরের নামে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধে জড়ানোর চক্রান্ত, কাতার-তুরস্ককে অস্ত্র কারখানা স্থাপনের সুযোগ দেওয়া এবং স্টারলিংকসহ জাতীয় স্বার্থবিরোধী সব চুক্তি বাতিলের দাবিতে রোডমার্চ কর্মসূচি পালন করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
‘সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণ’-এর ব্যানারে ২৭ ও ২৮ জুন ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডমার্চের অংশ হিসেবে শুক্রবার (২৭ জুন) সকাল ১১টায় চিটাগাং রোড ও দুপুর ১২টায় সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়ায় পৃথক পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
চিটাগাং রোডে অনুষ্ঠিত পথসভায় সভাপতিত্ব করেন বাম গণতান্ত্রিক জোট নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক হাফিজুল ইসলাম এবং মোগরাপাড়ায় সভাপতিত্ব করেন বাসদ সোনারগাঁও উপজেলা সমন্বয়ক বেলায়েত হোসেন।
পথসভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদ কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশ জাসদ কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. মোশতাক হোসেন, বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানা, সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা এডভোকেট মণ্টু ঘোষ, নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবর্ত্তী, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, বাংলাদেশ জাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সোলেমান দেওয়ান, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ফোরামের সদস্য সেলিম মাহমুদ, সিপিবি নেতা ইকবাল হোসেন, বাবুল, বাসদ নেতা এস এম কাদির, আনোয়ার খান প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিউমুড়িং কনটেইনার টার্মিনালটি আমিরাতভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এতে অর্থনৈতিক ও জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। কারণ ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে মার্কিন নৌবাহিনীর চুক্তি থাকায় এর মাধ্যমে বন্দরে মার্কিন সামরিক উপস্থিতির সুযোগ তৈরি হবে।
তারা আরও বলেন, রাখাইনে কথিত মানবিক করিডোর প্রতিষ্ঠা ও অস্ত্র কারখানা স্থাপন– এ ধরনের সিদ্ধান্তগুলো সরকারের এককভাবে নেওয়া জাতীয় স্বার্থবিরোধী পদক্ষেপ। এসব নিয়ে রাজনৈতিক দল, জনমত কিংবা প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই চলমান প্রক্রিয়া জাতিকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
নেতারা প্রশ্ন তোলেন, করিডোর কোথা দিয়ে যাবে? রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে করিডোর কতটা কার্যকর হবে? মায়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মির সঙ্গে কোনো সমঝোতা হয়েছে কি না? চীন বিষয়টিকে কীভাবে দেখছে—এসব বিষয়ে জাতির কাছে জবাব দিতে হবে।
তারা আরও বলেন, সাবেক সরকার ভারতের স্বার্থে কাজ করেছে, আর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে কাজ করছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশকে গাজা, ইউক্রেন, ইরান বানানোর পথ তৈরি হচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ মানবিক করিডোর প্রদানের পরিকল্পনা বাতিল, নিউমুড়িং টার্মিনাল বিদেশিদের না দেওয়া, তুরস্ক ও কাতারের অস্ত্র কারখানা স্থাপন রোধ এবং জাতীয় স্বার্থবিরোধী সকল চুক্তি বাতিলের দাবি জানান।
