’গণধর্ষণের পর হত্যা’ মামলার সাক্ষী অপহরণ, ছয়জন গ্রেপ্তার

রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচলে গণধর্ষণের পর হত্যার শিকার ১১ বছর বয়সী সুবর্ণা আক্তার হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী রাশেদুল ইসলামকে অপহরণের ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারদের মধ্যে তিনজন সুবর্ণা হত্যা মামলার জামিনপ্রাপ্ত আসামি।
শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে পূর্বাচল ১৩ নম্বর সেক্টরের ভোলানাথপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন: ভোলানাথপুর এলাকার মো. রাসেল, সাব্বির হোসেন, রনি মিয়া, মো. শান্ত, মো. রনি ও মো. শিমুল। তাদের মধ্যে মো. রাসেল এক সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, পরবর্তীতে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত ছিলেন বলে জানা গেছে। রাসেল, সাব্বির ও রনি মিয়া সুবর্ণা হত্যা মামলার আসামি।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
সাক্ষী ও ভিকটিমের চাচা রাশেদুল ইসলাম জানান, ২০১৮ সালে তার চাচাতো ভাই রাকিব মিয়ার মেয়ে সুবর্ণা আক্তার (১১) গণধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সুবর্ণার বাবা বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় মামলা করেন। সেই মামলার পরিচালনা ও সাক্ষ্য দিয়ে আসছেন রাশেদুল। মামলার পর থেকেই আসামিরা রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে মামলা তুলে নিতে চাপ দিয়ে আসছিল।
রাশেদুলের অভিযোগ, শনিবার সকালে রাসেলের নেতৃত্বে প্রায় ১৫ জন অস্ত্রধারী পূর্বাচলের তাঁর অফিসে গিয়ে তাঁকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে আটকে রাখে। এ সময় তাঁকে ৭০ লাখ টাকা মুক্তিপণ ও মামলা তুলে নেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়।
ঘটনার খবর জানাজানি হলে অপহরণকারীরা তাঁকে একটি ইজিবাইকে করে বাইরে এনে আওয়ামী লীগ কর্মী আখ্যা দিয়ে পুলিশে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে রাশেদুলকে উদ্ধার ও ছয় অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করে।
রাশেদুল আরও জানান, অপহরণের সময় তাঁর কাছ থেকে নগদ তিন লাখ টাকা ও একটি হীরার আংটি লুট করে অপহরণকারীরা।
ওসি তরিকুল ইসলাম জানান, ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। রাশেদুল বাদী হয়ে ছয় গ্রেপ্তারকৃতসহ অজ্ঞাত আরও আটজনকে আসামি করে অপহরণ মামলা করেছেন। আদালতে পাঠানো হলে বিচারক ছয় আসামির প্রত্যেকের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তিনি বলেন, মামলার অন্যান্য পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।