দিনে ফাঁকা ফুটপাত রাতে হকারে জমজমাট

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: দিনের বেলা নগরীর অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাত হকারমুক্ত থাকলেও সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে ফুটপাত দখল করে ফেলে হকাররা। দিনের ফুটপাতের চিত্র যেন পলকের সাথেই পাল্টে যায়। হকারের কারণে ফুটপাত দিয়ে হাটার উপায় থাকে না। পুলিশি টহল চোখে পড়লে চোখের পলকে মালামাল গুছিয়ে কোন গলি বা ভবনের ভেতর ঢুকে যাচ্ছে হকাররা। পুলিশ চোখের আড়াল হলেই আবারো শুরু হচ্ছে ফুটপাত দখল করে রমরমা ব্যবসা। হকার আর পুলিশদের মধ্যে এই ইদুর-বিড়ালের খেলা চলছে প্রতিদিনই।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিবি রোডের ফুটপাত হকারমুক্ত থাকলেও সন্ধ্যায় নগরীর পুরো বঙ্গবন্ধু সড়কে সড়জমিনে দেখা যায়, সকালে যে ফুটপাত মরুভূমির মতো ফাঁকা ছিলো সেই ফুটপাত সন্ধ্যা বাড়ার সাথে সাথে দখলে চলে যাচ্ছে হকারদের। ফুটপাতে হাটার জায়গা না পেয়ে পথচারিরা ঝুঁকি নিয়ে চলছেন মূল সড়কে।

বেইলী স্কুলের শিক্ষার্থীর মা শাওলীন জাহান বলেন, সকালে তো ভালোই দেখলাম। মনে হয়েছিলো এবার একটু শান্তি পাবো কিন্তু রাতে তো আবার এসেই পরলো। যেই লাউয়ের সেই কদুই হলো। এতোবার উচ্ছেদ করলো, এতো মোবাইল কোর্ট হলো আমরা কী কোন সমাধান পেয়েছি? এই যে জীবনের ঝুকি নিয়ে আমার ছোট মেয়েকে সাথে নিয়ে ফুটপাত ছেড়ে রাস্তায় হাটছি কোন দূর্ঘটনা ঘটলে কে এর দায়ভার নেবে?

তোলারাম কলেজ থেকে অনার্স পাশ করা আজিজ বলেন, এই যে আবারো এসে বসছে এতে হকারের কোন দোষ নাই। কারন আমাদের মতো ওদেরও পরিবার আছে। দিন শেষে তাদেরও পরিবারের কাছে বাজার নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু সব কিছুর একটা মাত্রা থাকে। এই মাত্রা পার করেছে হকাররা। ফুটপাত যে পথচারির চলাচলের জন্য সেটা তারা ভুলে গেছে। হকাররাও মানুষ তাদের সরিয়ে দিলেও চলবে না, রাখলেও চলবে না। তাই প্রশাসনের কোন বিকল্প পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিৎ।

ফুটপাতে বসা আজম নামে এক হকার বলেন, আপনাদের মতো আমাদেরও তো পরিবার আছে। এইখান থেকে উঠাইয়া দিলে বিষ খাওয়া ছাড়া উপায় থাকবো না। পুলিশ উঠাইয়া দিসে এইটা তাদের পেট চালানের জন্য আমরা আবার আইসা বসছি আমাদের পেট চালানের জন্য। পেটের দায় চুরি করা যদি জায়েজ থাকতে পারে তাহলে আমরা ফুটপাতে বসে ব্যবসা করলে কার কী সমস্যা? আমাদের থেকে প্রতিদিন তো চান্দা নিতাছে তাইলে এই নাটক কেন করে?

হকার ইমরান আলী বলেন, আমাদের কথা কে চিন্তা করবো? আমরা কি বাংলাদেশের মানুষ না? আমাদের ভোটের কি দাম নাই?