২০ জুন ২০২৫

প্রকাশিত: ২২:১৮, ১ জুলাই ২০১৮

আপডেট: ১২:৫১, ২ জুলাই ২০১৮

প্রকাশ্যে ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজি!

প্রকাশ্যে ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজি!

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: ফতুল্লার শিবু মার্কেট-পোস্ট অফিস সড়কটিতে যানবাহন থেকে প্রকাশ্যেই চাঁদাবাজি চলছে। সারাদিনই সেখানে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। বেশ কয়েকদিন ধরে এই প্রক্রিয়া চলে আসলেও দেখার যেন কেউ নেই।

শনিবার (৩০ জুন) ও রবিবার (১ জুলাই) দুই দিন সরজমিনে ঘটনাস্থলে অবস্থান করে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা লিংক রোডের শিবু মার্কেটে সড়কের উপর বেআইনীভাবে ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান প্রবেশ করার অপরাধে চালকদের জরিমানা করছে ট্রাফিক পুলিশ। কিন্তু সেখানে দেখা যায় জরিমানার নামে চলছে চাঁদাবাজি। পোস্ট অফিস থেকে কোন গাড়ি শিবু মার্কেট আসলে গাড়ির গতিরোধ করে চালককে গাড়ির কাগজপত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখানোর কথা বলা হয়। এসময় বাড়তি ঝামেলা অথবা মামলার ভয়ে ট্রাফিক পুলিশের হাতে টাকা গুজে দিয়ে সটকে পড়ছে চালকরা। কিন্তু যারা মামলার কথা বলার পরেও টাকা দেয় না তাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সার্জেন্টের কাছে। মামলা কিংবা জরিমানা করা হচ্ছে সেখানে।

শিবু মার্কেট-পোস্ট অফিস সড়কটি ওয়ানওয়ে সড়ক। রিক্সা, অটো রিক্সা যাওয়া আসার নিয়ম থাকলেও সেখানে কাভার্ড ভ্যান কিংবা বড় কোন গাড়ি লিংক রোড থেকে এই সড়ক দিয়ে যাওয়ার কোন নিয়ম নেই।

জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমানের নির্দেশে রোজার মাস জুড়ে এই সড়কে যানবাহনগুলো একদিক দিয়ে যাতায়াত করেছে। কিন্তু ঈদের পরবর্তীতে আবার দুই দিক দিয়ে ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান যাতায়াত শুরু করে। যার ফলে সারাদিনই যানজট লেগে থাকে।

যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশকে রং রোডের গাড়িগুলোর চালকদের উপর মামলা করতে দেখা যায়। প্রথমদিন (৩০ জুন) সড়কের এক দোকানে বসে জরিমানা করছে ট্রাফিক পুলিশ সোহেল। পরের দিন (১ জুলাই) একই দায়িত্ব পালন করছে ট্রাফিক পুলিশ মোসলেম। তবে তাদের সামনেই গাড়ি আটকানো হচ্ছে এবং চালকদের মামলার জন্য আনা হচ্ছে। আবার কোন ধরনের মামলা ছাড়াই যখন গাড়ি ছেড়ে দিচ্ছে তখন দেখা যায় না তার কোন প্রতিক্রিয়া।

দুই দিন একই চিত্র দেখা যায় ট্রাফিক পুলিশ মোসলেম ও সোহেলের সামনে ট্রাফিক পুলিশ ব্রক্ষ্মানন্দ, এনামুল, তোফাজ্জল সাধারন ভাবে কাভার্ড ভ্যানের চালকদের কাছ থেকে ১০০ ও ২০০ টাকা নিচ্ছে। কারো কাছ থেকে আরো বেশি।

সড়কের যানজট ও জরিমানার সম্পর্কে ট্রাফিক পুলিশ ব্রক্ষ্মানন্দকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, রং রোড দিয়া গাড়ি ঢুকলে মামলা করতেছি। আর আমরা কিভাবে ব্যবস্থা নিতে পারি? গাড়ির চালকদের তো কোন দোষ নাই। পোস্ট অফিস দিয়ে গাড়ি ঢুকতেছে, ওই জায়গা দিয়া ঢুকতে না দিলে তো এই অবস্থা হয় না। মামলা করে দেয়া হচ্ছে আবার চালকের কাছ থেকে ১০০০ থেকে ২০০০ টাকা জরিমানা করা হচ্ছে। কিন্তু তারা যে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে মামলা কিংবা জরিমানা করে না। সে বিষয়ে তিনি কোন কথা বলেননি।

যানজট নিরসনে এই ব্যবস্থা সড়কের যানজটের মাত্রা আরও বাড়িয়ে তোলে। ট্রাক ও ভ্যানকে থামিয়ে চালকদের মামলা ও টাকার বিষয়ে কথা বলে। এর ফলে যানজটের মাত্রা আরও বৃদ্ধি করে। ভোগান্তির শিকার একজন যাত্রী রাগান্তিত হয়ে বলেন, কেমনে হাতটা বাড়ায় টেকা নিতাছে। কিযে করে। সরকার এত টেকা বেতন দেয়, হেরপরেও হাতটা বাড়াইতে লজ্জা করে না। গাড়িটা সাইড করলেও হয়। গাড়ি থামাইয়া জ্যাম ডাবল করতাছে। ১০-১৫ মিনিটের রাস্তায় এক-দেড় ঘন্টা বইসা থাকা লাগে।

নারায়ণগঞ্জ জেলার সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. আব্দুর রশিদের সাথে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, যানজট যেন না হয় সেই জন্য শিবু মার্কেটে ওয়ান ওয়ের সাইনবোর্ড দেয়া আছে। তারপরেও গাড়ি আসলে মামলা করা হয়। গাড়ির লাইসেন্স বা কোন ডকুমেন্টস না থাকলে মামলার বদলে জরিমানা করা হয়। কিন্তু সেই জরিমানা কমপক্ষে হাজার-পাঁচশ, একশ-দুইশ না। জরিমানার টাকা পুলিশ সুপারের ফান্ডে জমা হয়। এই টাকার হিসাব থাকে। রশিদ থাকে। একশ-দুইশ কোন জরিমানার মধ্যে পরে না। যদি রশিদ ছাড়া এইভাবে টাকা নেয়, কাজটা মোটেও ঠিক না।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়