করোনা পরীক্ষা শুরু: কিট সংকট, বন্ধ আইসিইউ সেবা

সারাদেশে ফের শুরু হয়েছে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। নতুন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ও মৃত্যুর খবরও পাওয়ার যাচ্ছে। কিট সংকটের কারণে নারায়ণগঞ্জে এতদিন করোনা পরীক্ষা বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি জেলার একটি হাসপাতালে র্যাপিড অ্যান্টিজেট টেস্ট চালু করা হয়েছে। কিন্তু আক্রান্তদের জন্য নেই নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)। এতে জনমনে বাড়ছে শঙ্কা।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশের প্রথম করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগী নারায়ণগঞ্জে শনাক্ত হয়। শিল্প অধ্যুষিত এই জেলার ঘনবসতির কারণে ভাইরাসটি দ্রুত সংক্রমিত হয়। এক পর্যায় নারায়ণগঞ্জ হয়ে উঠে করোনা ভাইরাসের ‘এপিসেন্টার’। ফলে দেশে প্রথম লকডাউন দেয়া হয় নারায়ণগঞ্জে।
২০২৩ সালের মে মাসে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এর মধ্যে বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে করোনার অমিক্রন ধরনের একটি উপধরণ জেএন-১-এ আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হন। দ্রুত ছড়ানোর কারণে জেএন-১-কে ‘ভেরিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ হিসেবে অভিহিত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, চলতি বছর দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে তিন শতাধিক এবং আক্রান্ত অবস্থায় মারা গেছে অন্তত পাঁচজন। তবে নারায়ণগঞ্জে এখনো কেউ শনাক্ত হয়নি। কিট সংকটের কারণে এতদিন পরীক্ষা বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এ হাসপাতালটি করোনা অতিমারীর সময়ে কোভিড-ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে নির্দেশিত ছিল।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় তখন এ হাসপাতালে পিসিআর ল্যাব ও দশ শয্যার আইসিইউ স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ল্যাবটি বন্ধ করে দেয়া হয়। অন্যদিকে প্রয়োজনীয় সকল সরঞ্জাম থাকার পরও জনবল সংকটের কারণে অকেজো পরে আইসিইউ। বর্তমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে ফের গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে পিসিআর ল্যাব ও আইসিইউ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল বাসার বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে কিছু সংখ্যক কিট দেয়ায় পিসিআর ল্যাব চালু করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১০ জনের করোনা টেস্ট করা হয়েছে। তবে কোনো পজেটিভ শনাক্ত হয়নি। করোনা পরিস্থিতিতে আইসিইউ খুবই জরুরি। আমরা জনবলের চাহিদার কথা জানিয়ে মহাপরিচালক বরাবর চিঠি পাঠিয়েছি।’
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুশিউর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে এ কার্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের দায়িত্বে থাকা মো. সাইফুল সালমান বলেন, ‘করোনা পরীক্ষার কিটের সংকট রয়েছে। এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ২০০ কিট দেয়া হয়েছে। তারা নিয়মিত পরীক্ষা করছে। কিটের জন্য আবেদন করা হয়েছে। কিট আসলে জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে পরীক্ষা শুরু করা সম্ভব হবে।’