আবির ফ্যাশনে শ্রমিক ছাঁটাই: ফতুল্লায় শ্রমিকদের বিক্ষোভ

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা আবির ফ্যাশন-এর ২০২ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করায় বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। আন্দোলনের ফলে ফতুল্লার কুতুবাইল ও কাঠেরপুল এলাকায় অন্তত ৮টি কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। সোমবার (৩০ জুন) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শিল্পাঞ্চলজুড়ে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, রোববার সন্ধ্যায় আবির ফ্যাশনের প্রোডাকশন ইউনিটে ১০ শ্রমিকের সঙ্গে এক কর্মকর্তার তর্কাতর্কির জেরে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ পুলিশ ও বহিরাগতদের নিয়ে এসে শ্রমিকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বলে অভিযোগ ওঠে।
সোমবার সকালে কাজে এসে শ্রমিকরা কারখানার সামনে ছাঁটাইয়ের নোটিশ দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এতে প্রায় এক হাজার শ্রমিক একত্র হয়ে প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। একপর্যায়ে তারা আশপাশের মাইক্রো ফাইবার গ্রুপ, মেট্রো নিটিং, ক্যাট টেক্স, পলমল গ্রুপ, টাইম সোয়েটার, আজাদ ফ্যাশনসহ অন্তত ৮টি কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন, যার ফলে কারখানাগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করে মালিকপক্ষ।
পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শ্রমিক ও মালিক পক্ষকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আলোচনায় বসানো হয়। তবে শ্রমিকদের দাবি পূরণ না হওয়ায় তারা আলোচনার টেবিল ছেড়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
বিক্ষোভরত শ্রমিকরা জানান, মালিক পক্ষের একতরফা সিদ্ধান্ত বাতিল, চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের পুনর্বহালসহ মোট ৮ দফা দাবি জানানো হয়েছে। তাদের অভিযোগ, মালিকপক্ষ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।
আবির ফ্যাশনের ম্যানেজার সাগর মল্লিক জানান, “আমাদের কারখানায় মোট ৩ হাজার শ্রমিক কর্মরত, এর মধ্যে গার্মেন্টস ইউনিটে রয়েছে ২ হাজার ৪০০ জন। এদের মধ্যে ২০২ জনকে আমরা চিহ্নিত করেছি, যারা বারবার বিশৃঙ্খলা করে আসছিল। এই চক্রটি পোশাক খাতকে অস্থিতিশীল করতে চায়।”
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, “শ্রমিকদের অলসতার কারণে কিছু উত্তেজনা তৈরি হয়। কারখানা কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দিলে আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।” তিনি জানান, রোববার রাতে ঘটে যাওয়া ঘটনার ভিত্তিতে একটি এজাহার দায়ের হয়েছে এবং বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।