২২ বছর বয়সে সিইও না’গঞ্জের ছেলে শাদমান সাদাব

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: স্নাতক পরীক্ষার ফল হাতে পাবার আগেই ফিউচার সিটি সামিট (এফসিএস) লিমিটেড নামে একটি হংকংভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে যোগ দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের ছেলে শাদমান সাদাব। মাত্র ২২ বছর বয়সে একটি প্রতিষ্ঠানের সিইও হিসেবে যোগ দিয়েছেন তিনি।
বাবা হাসানুজ্জামান ভূঁইয়া ও মা সাবিরা হাসানের একমাত্র ছেলে সাদাব। নারায়ণগঞ্জ আইডিয়াল স্কুল থেকে এসএসসি পেরোনোর পর শাদমান নটর ডেম কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন ২০১১ সালে। প্রতিদিন সকালে ট্রেনে করে ঢাকা আসতেন। ওই একই ট্রেনে চড়ে তিনি ধরেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস। তখন জীবনের লক্ষ্য কী ছিল? শাদমান বলেন, ‘তখন আসলে কোনো লক্ষ্য ছিল না। কী করছি, কেন করছি, কিছুই জানতাম না। ক্যাম্পাসে খুব ভালো সময় কাটত। আবার যখন ট্রেনে করে বাড়িতে ফিরতাম, মনে হতো স্বপ্ন থেকে বাস্তবে ফিরছি।’ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষ পর্যন্ত এভাবেই ক্লাস করেছেন। দ্বিতীয় বর্ষে ওঠার পর পরিবারসহ চলে আসেন ঢাকায়।
ছোটবেলায় শাদমান অন্তর্মুখী ছিলেন। নটর ডেমে ভর্তি হওয়ার পর প্রথম আবিষ্কার করলেন, পড়ালেখার পাশাপাশি কত কী করার আছে! কলেজে বছরজুড়ে যত অনুষ্ঠান-উৎসব-প্রতিযোগিতা হতো, প্রায় সবকিছুতে অংশগ্রহণ করতে শুরু করেন।
কাজ শেখার বড় সুযোগটা এল ২০১৬ সালে। শাদমান সাদাব খবর পেলেন, হংকংয়ে ‘ফিউচার সিটি সামিট’ নামে একটি সম্মেলন হবে। আবেদন করলেন। অংশগ্রহণের সুযোগও হলো। তখনো জানতেন না, এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের সনদে একদিন তাঁরই সই থাকবে!
গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের টেলিভিশন অ্যান্ড ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগ থেকে স্নাতক শেষ করেছেন তিনি। যখন তাকে সিইও’র দায়িত্ব দেয়া হলো তখন তিনি তার পরীক্ষার রেজাল্ট হাতে পাননি।
ভবিষ্যতের শহর গড়ার লক্ষ্যে প্রতিবছর একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করে এফসিএস। ২০১৬ সালে যাত্রা শুরু হওয়ার পর থেকে তাঁদের কাজের পরিধি দিনে দিনে বিস্তৃত হয়েছে। উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোর বিভিন্ন শহরের সমস্যাগুলো খুঁজে বের করা, সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও উদ্যোগী তরুণদের মধ্যে একটি যোগসূত্র স্থাপন করা, সম্ভাবনাময় উদ্যোগগুলোর জন্য বিনিয়োগের ব্যবস্থা করা, তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এমন নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছে এফসিএস। এখন এই সবকিছুর নেতৃত্বের দায়িত্ব শাদমানের।
একসময় যে ছেলে ক্লাস করতে প্রতিদিন ট্রেন ধরত, এখন সে প্লেনে চড়ে আজ এ দেশ তো কাল সে দেশে ঘুরে বেড়ায়।
প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম