২১ জুন ২০২৫

প্রকাশিত: ১৬:৫৬, ২২ ডিসেম্বর ২০১৭

আপডেট: ১৮:০৬, ২২ ডিসেম্বর ২০১৭

এক বছরের কাজে ভোটাররা ভালো ফিডব্যাক দিচ্ছে: টিটু

এক বছরের কাজে ভোটাররা ভালো ফিডব্যাক দিচ্ছে: টিটু

প্রেস নারায়ণগঞ্জ ডটকম: নারায়ণগঞ্জ ক্লাব লিমিটেডের নির্বাচন ঘিরে প্রেস নারায়ণগঞ্জ মুখোমুখি হয়েছে নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী বর্তমান সভাপতি তানভীর আহমেদ টিটুর। নির্বাচন নিয়ে তিনি খোলামেলা কথা বলেছেন। তার কথায় উঠে এসেছে নির্বাচনে তার প্রস্তুতি, প্রচারনা, ভোটারদের কাছে তার চাওয়া পাওয়া, প্রতিশ্রুতি নানা বিষয়। প্রেস নারায়ণগঞ্জের পাঠকদেও জন্য তার এই সাক্ষাতকার হুবহু তুলে ধরা হলো।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: কেমন আছেন?

তানভীর: আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: অনেক ব্যস্ত সময় পার করছেন তাই না, কি অবস্থা আপনার প্রচারনার?
তানভীর: চলছে. ভালোই।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: কেমন সাড়া পাচ্ছেন ভোটারদের? এখন পর্যন্ত সকল ভোটারদের কাছে যেতে পেরেছেন?

তানভীর: সবার কাছেই গিয়েছি মোটামুটি। ক্লাবের মোট সদস্য ১৪০০জন। আর ভোটার হলো ১২১১ জন। এর মধ্যে কিছু অংশ ক্লাব ব্যবহার করেন না। তারা ঢাকা কিংবা বিভিন্ন জেলায় বসবাস করেন। তো তাদের সবার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছি। তবে ইনশাআল্লাহ সবার কাছে যাবো।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: ভোটারদের কোন প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন?

তানভীর: ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি তো অবশ্যই। নির্বাচনে কিছু প্রতিশ্রুতি তো থাকেই। একটাই প্রতিশ্রুতি, নারায়ণগঞ্জ ক্লাবকে দেশের সেরা ক্লাবগুলোর সমপর্যায় নিয়ে যাওয়া। এবং সেই প্রতিশ্রুতি ছাড়া ক্লাবের দায়িত্ব নিয়ে লাভ কি?

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: গত পাঁচ বছর ধরে নির্বাচন হয়নি। বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এবার নির্বাচন হওয়ার নেপথ্যে কারণ কি বলে মনে করেন আপনি?

তানভীর: ইলেকশনে কোন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেনি তাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত কমিটি হয়েছে গত ৪ বছর। আর এর নেপথ্যের কারণ তো আমার জানা নাই। এর নেপথ্যের কারণ একটাই হতে পারে সেটা হলো আগে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি এবার করছে।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: এবারের নির্বাচন তো শহরবাসীর কাছে আলাদা একটি গুরুত্ব বহন করছে। যেমন এবারই দেখা যাচ্ছে, আপনার নেপথ্যে রয়েছে নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবার আর আপনার প্রতিপক্ষের পেছনে নাসিক মেয়র ডা: সেলিনা হায়াত আইভী। বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন? নির্বাচনে এই সমর্থন কোন প্রভাব ফেলবে কি না?

তানভীর: আমি কখনোই মনে করি না আমি ওসমান পরিবারের লোক। আর আমি কখনোই মনে করি না মেয়র যিনি আছেন তিনি আমার প্রতিপক্ষের অন্য কাউকে সাপোর্ট দিচ্ছেন। আমি রাজনীতির সাথে জড়িত না। আমি সবার সাথেই কথা বলি। সবার কাছেই আমি যাই। ইনফেক্ট আমার মেয়রের সাথেও কথা হয়েছে। মেয়র হলো ডাক্তার। ওনার সাথে আগে থেকেই আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক। আমার বড় ভাই ডাক্তার, আমার কাজিন ডাক্তার। ওনারা যখন দেশের বাহিরে ছিলেন তখন পাশাপাশি বাড়িতে থাকতেন সেই হিসেবে তার সাথে আমাদের একটি ভালো সম্পর্ক তৈরী হয়। তাছাড়া মেয়রের ছোট ভাই আর আমি একই সাথে পড়াশুনা করেছি। আমরা খুব ভাল বন্ধু। তাই নারায়ণগঞ্জে বিভক্তির যে রাজনীতি হয় সেটা একমাত্র জাতীয় নির্বাচনে। তাই ক্লাবের নির্বাচনে এ ধরনের কিছু হবে সেটা আমি মনে করি না। কারণ ক্লাবের নির্বাচন খুব লিমিটেড ভাবে হয়। এখানে শুধু ক্লাবের সদস্যরাই ভোট দিতে পারেন। যেহেতু রাজনৈতিক ইস্যু দিয়ে ক্লাব নির্বাচন হয় না সেহেতু রাজনীতিক ব্যাপার সামনে এনে নির্বাচন হবে এটা আমি মনে করি না। তবে সবারই ব্যাক্তিগত পছন্দ থাকতে পারে। সো, সেই পছন্দের আলোকেই নির্বাচন হবে।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: ক্লাব ও সদস্যদের নিয়ে ভবিষ্যৎ কোন পরিকল্পনা আছে কি? যদি থাকে তা কি কি?

তানভীর: অবশ্যই। ক্লাব ও সদস্যদের নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা থাকবে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ছাড়া ক্লাবের দায়িত্বে এসে লাভ টা কি তাহলে? আমাদের নারায়ণগঞ্জ ক্লাব আগামী বছর ১২৫ বছরে পদার্পণ করবে। তার ১২৪তম বছর আমরা পার করছি। অত্যন্ত সম্মানের বিষয় হলো নারায়ণগঞ্জে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের মতো একটি ক্লাব রয়েছে। আমাদের নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে বিদ্যমান যে সুযোগ ও সুবিধা ছিল সেটাকে অনেক আপডেট করেছি। বলতে গেলে ক্লাবের সিস্টেমটাকে অনেক আপডেট করেছি। ড্রেনেজ সিস্টেমটাকে উন্নত করার চেষ্টা করে আসছি। ক্যাশলেস ট্রানজেকশন সিস্টেম চালু করতে যাচ্ছি। এতে করে ক্লাবের সম্মানিত সদস্যরা ক্যাশ টাকার পরিবর্তে কার্ডে লেনদেন করতে পারবে। ঢাকা ক্লাব, উত্তরা ক্লাব, গুলশান ক্লাবে যেমনটা হয় আর কি। ১২৫বছর পার করে এই ডিজিটাল বাংলাদেশে ক্লাবকে ডিজিটালাইজড করাই আমার উদ্দ্যেশ্য। সদস্যরা যাতে সারাদিন পরে ক্লান্ত হয়ে ক্লাবে এসে একটু রিলেক্স হতে পারে সেই লক্ষ্যেই কাজ করা আমার।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: বিজয়ের ব্যাপারে কতটা আশাবাদী?

তানভীর: বিজয়ের ব্যাপারে অবশ্যই আশাবাদী। দাবী সহকারে আশাবাদী। কারণ গত ১বছরে যেভাবে কাজ করেছি তাতে সবাই ভাল ফিডব্যাক দিচ্ছে। এটাই আমার কাছে বড় পাওয়া। তো সেই হিসেবে বিজয়ের ব্যাপারে ইনশাআল্লাহ আল্লাহ যদি সহায় থাকেন ২৩ তারিখেই সব বুঝা যাবে।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: আপনার দায়িত্ব পালনের সময়কালে এমন কি কাজ ছিল যা আপনি পূরণ করতে পারেন নি?

তানভীর: আসলে কাজ কখনো থেমে থাকে না। আমরা অনেক কাজ শুরু করেছি। ক্লাবের অভ্যন্তরে যতগুলো লাউঞ্জ আছে, সুইমিং পুলসহ যতগুলো ফেসিলিটিজ রয়েছে সবগুলো ফেসিলিটিজেই পর্যায় ক্রমে কাজ হবে। পুল রুম কমপ্লিট হয়েছে, স্নুকার রুম কম্পিলিট হয়েছে, বাকী লাউঞ্জের কাজ বন্ধ রেখেছি নির্বাচনের কারনে। আমরা যে কাজগুলো শুরু করেছি সেটা চলমান থাকলে আশা করছি এক দেড় মাসের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: ৫ বছর পরে অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচনকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

তানভীর: নির্বাচন তো অবশ্যই অংশগ্রহণ মূলক হওয়া উচিত। নির্বাচন মানেই তো হচ্ছে সবার অংশগ্রহন। আর সবার অংশগ্রহন থাকলে সেটা স্বতঃস্ফূর্ত হবে। এখন ক্লাবে যে উৎসবমুখর পরিবেশ রয়েছে তাতে সবাই রিফ্রেশড থাকছে। আর আমি প্রথমেই বললাম যে এটাই আমাদের উদ্দেশ্য। তো প্রতিবারই যদি প্রার্থীরা নির্বাচনে আসেন তো সেটাই হবে ক্লাবের সবথেকে বড় রিফ্রেশনাল পার্ট। নির্বাচনের সময়েই প্রার্থীদের সাথে ভোটারদের ইন্টারেকশনটা বাড়ে। তাই নির্বাচনটা প্রতিবছরেই হওয়া উচিত। ক্লাবের নির্বাচন কোন জাতীয় নির্বাচন না। ক্লাবের নির্বাচন ইন্টারনাল একটি পার্ট। সে জায়গাটি ঠিক রেখে নির্বাচন করা উচিত। জাতীয় নির্বাচনে বিভিন্ন দল থাকে কিন্তু এখানে কোন দল নেই। দেখতে হবে কে কতটুকু কাজ করেছে, কাজ করতে পারবে, কাজের যোগ্য। আমি যদি নির্বাচিত হই অথবা নির্বাচিত নাই হই তবুও তো এ ক্লাবের সদস্য হিসেবে থাকবো। আমি নিজ উদ্গে সকল সদস্যকে উদ্ভুদ্ধ করবো যাতে নির্বাচনটা প্রতি বছর হয়, কোন গ্যাপ যাতে না হয়।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

তানভীর: আপনাদেরও ধন্যবাদ।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়