ভালোবাসার ‘লাল’ নাকি বসন্তের ‘বাসন্তী’ কোন রঙে সাজবে নগরী?

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: ফেব্রুয়ারি মানেই পরপর দুটি উৎসব। পহেলা ফাল্গুন আর বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। ঋতুরাজ বসন্তের কথা মুখে আসতেই মনে পরে হলুদ, বাসন্তী শাড়ি-পাঞ্জাবী, খোপা ভর্তি ফুল, গাধা ফুলের গয়না। অন্যদিকে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের কথা ভাবতেই মনে পড়ে লাল, নীল শাড়ি-পাঞ্জাবী, মাথার ফুলের মুকুট, হাতে ভালোবাসার লাল গোলাপ। কিন্তু এ বছর একই দিনে উদযাপিত হতে যাচ্ছে দুটি উৎসব। একই দিনে দুই উৎসব উদযাপন নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন অনেকেই। আগামীকাল কোন সাজে সাজবে নগরবাসী। ফাল্গুনের বাসন্তী রঙ্গে নাকি ভালোবাসার লাল রঙে?
সারাবছর দিবস দুটিকে কেন্দ্র করে উৎসাহ দেখা যায় সকল শ্রেণিপেশার মানুষের মাঝে। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে। ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করে নিতে থাকে নানা আয়োজন। পোশাক, পরিচ্ছদ, গয়না সবকিছুতেই থাকে পহেলা ফাল্গুনের ছোয়া। একইভাবে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করেও থাকে ব্যাপক প্রস্তুতি। তবে এ বছরের বিড়ম্বনা পড়েছেন অনেকে। তাদের বিড়ম্বনা নিয়ে কথা বলেছেন প্রেস নারায়ণগঞ্জের সঙ্গে। পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো।
বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের তুলনায় বসস্ত বরণকে বেশি গুরুত্ব দেন নারায়ণগঞ্জ কলেজের অর্নাসের শিক্ষার্থী অন্তরা আক্তার। অন্তরা বলেন, ‘ভালোবাসা দিবস আমারা জন্য গুরুত্বপূর্ণ তবে তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ পহেলা ফাল্গুন। কেননা পহেলা ফাল্গুনের সঙ্গে আমার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য জড়িয়ে আছে। আর পহেলা ফাল্গুন আমাদের দেশের ঐতিহ্যকে তুলে ধরে, ভালোবাসা দিবস নয়। তাই এ আগামী ১৪ই ফেব্রুয়ারি আমি সাজবো বসন্তের রঙে। বাসন্তি শাড়ি আর খোপায় থাকবে হলুদ গাধা ফুল।’
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী মো. আফজাল হোসেন বলেন, ‘জীবনসঙ্গীর সঙ্গে এই প্রথম দিন দুটি উদযাপন করতে যাচ্ছি। তাই ভালোবাসা দিবসকেই আমি বেশি গুরুত্ব দেবো। তার জন্য বিশেষ কিছু উপহার কিনেছি। আশা করবো তার পছন্দ হবে। তার সঙ্গে লাল গোলাপ তো থাকবেই।’
আফজাল বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে গুরুত্ব দিলেও তার জীবনসঙ্গি রিদিমা আক্তারের ধারণা কিছুটা অন্যরকম। রিদিমা বলেন, ‘ভালোবাসা দিবস অবশ্যই আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ তবে পহেলা ফাল্গুন একইভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এ বছর যেহেতু একই দিনে দুটি উৎসব সেহেতু আমি দুটিই উদযাপন করতে চাই। দিনের প্রথম অংশে আমরা ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করবো এবং বিকেলে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উদযাপন করবো। এ জন্য আমরা আমাদের পোশাকগুলোও সেভাবে সাজিয়েছি। আমার জন্য লাল-হলুদ শাড়ি আর পাঞ্জাবী। দিনের প্রথম অংশে গাধা ফুলের গয়না এবং বিকেলে রঙিন ফুলের মুকুট পড়বো।’
সকলে নানা সাজে দিনটি পালত করতে উদগ্রীব হলেও তোলারাম কলেজের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জুয়েল মিয়ার জন্য বিষয়টি একদই ব্যতিক্রম। জুয়েল বলেন, ‘সিঙ্গেল মানুষের জন্য আবার উৎসব। পহেলা ফাল্গুন অথবা ভালোবাসা দিবস, কোনোটাই আমার জন্য গুরুত্ব রাখে না। ১৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার, ছুটির দিন। সারাদিন বিছানায় পরে ঘুমাবো। আর কোনো পরিকল্পনা নাই।’
প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম